প্রথম ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে প্রতীক পেয়ে আজ (শুক্রবার) থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর প্রতীক পেয়েই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। এ ধাপের ২৫ পৌরসভায় চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ২১৮ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে মেয়র পদে ৯৩ জন, সাধারণ কাউন্সিলর ৮৪৮ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২৭৭ জন রয়েছেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গত ২২ নভেম্বর ২৫টি পৌরসভার তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন করে ইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ি এসব পৌরসভায় আগামী ২৮ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
প্রার্থীদের আচরণবিধি প্রতিপালনে বিশেষ দিক নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল বা কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান একটি ওয়ার্ডে একই সঙ্গে পথসভার জন্য একটি এবং নির্বাচনি প্রচারণার জন্য এক এর অধিক মাইক্রোফোন বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্যবিধ যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন না। এছাড়া নির্বাচনি এলাকায় মাইক বা শব্দের মাত্রা বর্ধনকারী অন্যবিধ যন্ত্র দুপুর ২টার আগে বা রাত ৮টার পরে ব্যবহার করা যাবে না।
পোস্টার নির্ধারিত মাপের ও সাদাকালো হতে হবে। কোনো অনুষ্ঠান বা মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া বা প্রার্থনারত অবস্থার কোনো ছবি পোস্টারে ব্যবহার না করে সাধারণ ছবি রাখতে হবে। সেই সঙ্গে মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা ও তারিখ থাকতে হবে।
প্রার্থীর নিজের ও প্রতীক ছাড়া অন্যকারো ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী হলে সেই দলের বর্তমান প্রধানের ছবি পোস্টার বা লিফলেটে ব্যবহার করতে পারবেন।
কোনো স্থাপনা, যানবাহন বা দেওয়ালে পোস্টার, প্রচারপত্র লাগানো যাবে না। তবে ভোটকেন্দ্র ছাড়া অন্যত্র ঝোলানো বা টাঙানো যাবে।
এছাড়া নির্বাচনি প্রচারণায় উস্কানিমূলক বক্তব্যের পাশাপাশি ধর্মীয় উপসানালয়ে প্রচারণা চালাতে পারবেন না প্রার্থীরা।
প্রচারণায় পথসভা ও ঘরোয়া সভা ছাড়া কোনো জনসভা বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। সড়ক আটকে মঞ্চ তৈরি ও পথসভা করা যাবে না। পথসভা ও ঘরোয়া সভা করতে চাইলেও
কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে তার স্থান ও সময় সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
প্রচারণাকালে কোনো প্রার্থী অন্য প্রার্থীর প্রচারণা বা সভায় পণ্ড বা বাধা দিতে পারবেন না।
প্রার্থী প্রচারণাকালে ভোটার স্লিপ দিতে পারবেন। প্রচারণায় নিজের প্রতীক বোঝাতে জীবন্ত কোনো প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না। বিলবোর্ড স্থাপন করা যাবে না। ৩৬ বর্গ মিটারের অধিক প্যান্ডেল বানানো যাবে না। এছাড়া আলোকসজ্জা, সড়কে নির্বাচনী ক্যাম্প, কোনো গেইট ও তোরণ নির্মাণেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌ-যান, ট্রেন কিংবা অন্যকোনো যান্ত্রিক যানবাহনসহ মিছিল বা মশাল মিছিল বা অন্যকোনো মিছিল বা শোডাউন করা যাবে না।
নির্বাচনি প্রচার কাজে হেলিকাপ্টার বা অন্যকোনো আকাশযান ব্যবহার করা যাবে না। তবে দলীয় প্রধানের যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা যাবে। তবে হেলিকাপ্টার হইতে লিফলেট, ব্যানার বা অন্যকোনো প্রচার সামগ্রী বিতরণ বা প্রদর্শন করতে পারবেন না।
কোনো প্রার্থী তার নির্বাচনি এলাকায় সরকারি উন্নয়নসূতিতে কর্তৃত্ব করতে পারবেন না কিংবা এ সংক্রান্ত কোনো সভায় যোগ দিতে পারবেন না। এছাড়া আগেই কোনো প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতি বা সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে বা মনোনীত হয়ে থাকলেও নির্বাচনকালীন সময়ে সভায় সভাপতিত্ব বা অংশগ্রহণ বা অন্যকোনো কাজে অংশগ্রহণ বা জড়িত হতে পারবেন না।
দণ্ড: কোনো প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। এছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল অথবা কোনো প্রার্থীর পক্ষে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তাছাড়া প্রার্থীতা বাতিলে ক্ষমতাও রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
২ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ৬১টি পৌরসভায় ভোটের তফসিল দেয় কমিশন। এতে মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ২০ ডিসেম্বর, মনোনয়ন বাছাই ২২ ডিসেম্বর, প্রত্যাহার ২৯ ডিসেম্বর এবং ভোটগ্রহণ করা হবে ১৬ জানুয়ারি। এই ধাপে ২৯টি পৌরসভায় ইভিএম এবং ৩২টিতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।