করোনাভাইরাস মহামারিতে গত ৯ মাসে চাকরি হারানোসহ বিভিন্ন কারণে দেশে ফিরেছে ৪ লাখের বেশি প্রবাসী। বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্যমতে, ১ এপ্রিল থেকে ২৭ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরেছে ৩ লাখ ৯৮ হাজর ২৮৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ প্রবাসী ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮৬ জন এবং নারী প্রবাসী ৪৮ হাজার ৬৯৮ জন। বাংলাদেশের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো বলছে এ তথ্য শুধু হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের।
এ ছাড়া চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দিয়ে কিছু প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। আবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে যত যাত্রী দেশে ফিরেছে, তাদের সবার তথ্য সংরক্ষণ করা যায়নি। প্রকৃত সংখ্যা আরো কিছু বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা সারাক্ষণ-কে জানান, দেশে ফিরে আসার সংখ্যা আরো বেশি কিছু হতে পারে। বিমানবন্দর থেকে সবার তথ্য সংরক্ষণ করা হয়তো সম্ভব হয়নি। দেশে ফেরার পর যাত্রীদের লাইনে দাঁড় করিয়ে তথ্য নেয়া হয়। অনেকে লাইনে না দাঁড়িয়ে চলে যায়। সবাই তথ্য দেয় না।
দেশে ফেরা প্রবাসীদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৯৩ শতাংশের বেশি কর্মী মধ্যপ্রাচ্যের দুটি দেশ, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফেরত এসেছে। সবচেয়ে বেশি প্রবাসী ফিরেছে সৌদি আরব থেকে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি থেকে প্রবাসী ফিরেছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫১৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৯৬ হাজার ৫০৯ জন, নারীর সংখ্যা ২১ হাজার ১০ জন। সৌদি আরবের পরে অবস্থান করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটি থেকে প্রবাসী ফিরেছে ১ লাখ ৯ হাজার ২৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ প্রবাসীর সংখ্যা ৯৮ হাজার ৪০ জন, নারীর সংখ্যা ১১ হাজার ২১৬ জন।
তারপর আছে কাতার। কাতার থেকে ফিরেছে ৪৭ হাজার ৫৬১ জন। ওমান থেকে ফিরেছে ২৩ হাজার ২৭৩ জন। মালয়েশিয়া থেকে ফিরেছে ১৬ হাজার ৮২০ জন। তুরস্ক থেকে ফিরেছে ১৫ হাজার ৭৯৯ জন। মালদ্বীপ থেকে ফিরেছে ১৫ হাজার ৬৫৪ জন। কুয়েত থেকে ফিরেছে ১৫ হাজার ২২৭ জন। ইরাক থেকে ফিরেছে ১০ হাজার ১৬৯ জন। সিঙ্গাপুর থেকে ফিরেছে ৮ হাজার ২০০ জন। বাকি প্রবাসীরা ফিরেছে বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে।
বাংলাদেশের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা সারাক্ষণকে বলেন, দেশে ফেরা প্রবাসীদের মধ্যে সবাই কাজ বা চাকরি হারিয়ে দেশে ফেরেননি। কিছু সংখ্যক আছে কাজ হারিয়ে ফিরেছেন, আবার কিছু সংখ্যক আছে কারাবাসের পর দেশে ফিরেছেন। অনেকে ছুটিতে এসেছেন, তারা ছুটির শেষে ফিরে যাবেন। কিছু সংখ্যক ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় দেশে ফিরেছেন। আবার দেখা গেছে অনেকে দীর্ঘদিন কাজ করার পর একবারে দেশে ফিরেছেন। তবে ফিরে আসার প্রধান কারণ করোনা সংক্রমণ।