ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে সাফল্য অব্যাহত রয়েছে বাংলাদেশের। সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে আবারও সিরিজ জয় করেছে সাকিব-তামিমরা। শুক্রবার তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ উইকেটে জয়ের মাঝ দিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। সব উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ১৪৮ রানের জবাবে বাংলাদেশ ১০০ বল হাতে রেখে ৩ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয়। সিরিজে বাংলাদেশ এখন ২-০তে এগিয়ে। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ ৬ উইকেটে জয় পেয়েছিল। আগামী ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রামে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
সব বিভাগে দাপট দেখিয়ে ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুদ্রা ভাগ্যে জয় পেয়েছিল সফরকারী অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বাংলাদেশের সামনে বড় একটা লক্ষ্যমাত্রা ছুঁড়ে দেবার পরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু তার সে পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে তারা। ফলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের ব্যাটিং ব্যর্থতা প্রকট হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশের পেস ও স্পিন বোলিংয়ে নাকানি চুবানিতে কাহিল অবস্থা তাদের। এতটাই নাজুক অবস্থায় যে, প্রথম ম্যাচের ১২২ রান তারা এ ম্যাচে টপকাতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। শেষ পর্যন্ত কোনোমতে প্রথম ম্যাচের ইনিংস টপকেছে তারা।
দিনের পঞ্চম ওভারেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের প্রথম উইকেট হারিয়েছিল। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে আউট হয়েছিলেন সুনিল অ্যামব্রিস। দলীয় ১০ ও ব্যক্তিগত ৬ রানে স্লিপে মেহেদি হাসান মিরাজের হাতে ধরা পড়েন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ওপেনার। নিজের প্রথম বল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনারকে বেশ অস্বস্তিতে রেখেছিলেন মোস্তাফিজুর। আটোসাটো বোলিং করেছেন এই বাম হাতি পেসার। বল হাতে যথেষ্ঠ কৃপণতারও পরিচয় দিয়েছেন তিনি। ৭.৫ ওভারে ১৫ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। মোস্তাফিজুরের সঙ্গে বোলিংয়ে জুটি বেঁধেছিলেন অভিজ্ঞ রুবেল হোসেন। তবে প্রথম ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও থেকেছেন উইকেটশূন্য।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কিছুট সফল ছিলেন অভিষেক হওয়া ওটলে। ২৪ রান করেছেন তিনি। মেহেদি হাসানের বলে শেষ হয় তার ইনিংসটি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ১৪৮ এ নিয়ে যাওয়ার পেছনে বড় অবদান রভম্যান পাওয়েলের। ৬৬ বলে ৪১ রান করেছেন তিনি। মেহেদি হাসানের বলেই শেষ হয় তার ইনিংস। সে সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সফল মেহেদি হাসান মিরাজ। ৪ উইকেট পেয়েছেন এ স্পিনার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল সর্বনাশটা তার বোলিংয়ে। প্রথম দুই ওভারে উইকেট না পাওয়া মিরাজ তৃতীয় ওভারে দুই উইকেট নিয়েছেন। পরে উইকেট সংখ্যা চার করেন তিনি।
এদিকে সাকিব আল হাসান বল হাতে নিয়েই উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন। নিজের প্রথম ওভারের শেষ বলে উইকেট পান তিনি। শেষ পর্যন্ত ১০ ওভারে ৩০ রানে দুই উইকেট পান প্রথম ম্যাচে ৮ রানে ৪ উইকেট শিকারী সাকিব আল হাসান। উইকেট শিকারের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন গত ম্যাচে অভিষেক হওয়া হাসান মাহমুদও। এক উইকেট শিকার তার।
সহজ জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় খেলতে নেমে লিটন দাস দ্রুত গতিতে রান তোলার চেষ্টা করেছিলেন। ২৪ বলে ২২ রান করেছেন তিনি। তবে অধিনায়ক তামিম ইকবাল অধিনায়কোচিত ইনিংস উপহার দিয়েছেন। ৫০ রান করেছেন। ৭৬ বলে তিন বাউন্ডারি আর এক ওভার বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। রেমন রেইফারের বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন তিনি।
তামিমের আগে বিদায় নেন নাজমুল হোসেন শান্ত (১৭)। তিন উইকেট হারালেও অভিজ্ঞ দুই সৈনিক সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম ঠিকই দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছেন। সাকিব ৪৩ রানে এবং মুশফিকুর ৯ রানে অপরাজিত থাকেন।