২০০২ সালে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও অন্য ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাা দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ূন কবির এ রায় ঘোষণা করেন।
ঘোষিত রায়ে সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক এমপি হাবিব এবং রিপন ও আরিফকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আব্দুর কাদের নামে এক আসামিকে ৯ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। রায়ে সর্বনিম্ন সাজা দেয়া হয়েছে ৪ বছর।
এদিকে রায় ঘিরে বৃহস্পতিবার সকালেই এ মামলায় জেলহাজতে থাকা ৩৪ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে তোলা হয়।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি এ মামলার ৫০ আসামির মধ্যে তালা-কলারোয়া আসনের বিএনপির সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৪ জনের জামিন বাতিল করেন আদালত। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন কলারোয়ার সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা গাজী আক্তারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুস সামাদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন ও আবদুর রকিব মোল্লা এবং বিএনপি নেতা তামিম আজাদ মেরিন।
এ মামলায় অভিযুক্ত ৫০ আসামির একজন টাইগার খোকন অন্য এক মামলায় কারাগারে আছেন। পলাতক রয়েছেন সাবেক পৌর কাউন্সিলর আবদুল কাদের বাচ্চুসহ ১৫ জন।
সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির তাদের জামিন বাতিল করেন। গত ৪ ডিসেম্বর মামলার বিচারকাজ। বিভিন্ন মেয়াদে ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
২০০২ সালের ৩০ আগস্ট ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সড়কপথে ঢাকায় ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। তখন শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এতে শেখ হাসিনা প্রাণে বাঁচলেও বহলে থাকা অনেকেই গুরুতর আহত হন।
এ ঘটনায় থানায় মামলা না নেয়ায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদী হয়ে যুবদল নেতা আশরাফ হোসেন, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০১৫ সালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দেন।