রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে একযোগে শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রম। রবিবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) প্রথম দিনে ঢাকাসহ সারা দেশে ১ হাজার ৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেয়া হচ্ছে। যার মধ্যে ঢাকার ৫০টি কেন্দ্র রয়েছে। সকাল ৮টা থেকে এ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চলবে টানা দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত।
রবিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার যে ৫০টি কেন্দ্রে টিকা দেয়া হচ্ছে তার মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ২১টি ও দক্ষিণে ২৯টি কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রে ২০৬টি টিম কাজ করছে।
রাজধানীর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) টিকাদান কেন্দ্রগুলো হলো- সংসদ সচিবালয় ক্লিনিক, মহাখালীতে সংক্রামক রোগ হাসপাতাল, উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, মিরপুরের ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, শ্যামলীতে ঢাকা শিশু হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতাল, মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার, জাতীয় বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ প্রতিরোধ কেন্দ্র, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল), শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় নাক কান ও গলা ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, শ্যামলীর ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতাল।
এছাড়া ডিএনসিসির মগবাজারের নয়াটোলা মাতৃসদন কেন্দ্র, মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ি মাতৃসদন কেন্দ্র, মিরপুর মাজার রোডের নেকি বাড়ির টেক মাতৃসদন কেন্দ্র, মিরপুরের বর্ধিত পল্লবী এলাকা মাতৃসদন কেন্দ্র ও উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের মাতৃসদনে করোনার টিকা বা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) টিকাদান কেন্দ্রগুলো হলো- সচিবালয় ক্লিনিক, ফুলবাড়িয়ায় সরকারি কর্মজীবী হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, মাতুয়াইল শিশু মাতৃসদন হাসপাতাল, রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতাল, আজিমপুর মা ও শিশু হাসপাতাল, কামরাঙ্গীরচরে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নয়াবাজারে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, পিলখানার বিজিবি হাসপাতাল, লালবাগে ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতাল।
এছাড়া বংশালের কসাইটুলী নগর মাতৃসদন, হাজারীবাগে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন নগর মাতৃসদন, ধলপুরে নগর মাতৃসদন, উত্তর মুগদা মাতৃসদন ও খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়া মাতৃসদন কেন্দ্রে করোনার টিকা বা ভ্যাকসিন দেয়া হবে।
গত ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সকে করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বহুল প্রতীক্ষিত টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এবং প্রথম ৫ জনকে টিকা দেয়া দেখেন। সব মিলিয়ে উদ্বোধনী দিনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৬ জনকে টিকা দেয়া হয়।
পরদিন ২৮ জানুয়ারি ঢাকার ৫টি হাসপাতালে একদিনে ৫৪১ জনকে করোনা ভ্যাকসিন দেয়া হয়। ওইদিন সকাল ৯টা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ৪টি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ৪টি, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪টি, কুর্মিটোলনা জেনারেল হাসপাতালে ৪টি ও কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে একটি বুথে করোনার টিকা দেয়া হয়।
ওইদিনই বিএসএমএমইউ বুথে প্রথম টিকা নেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। একইসময়ে দেশের প্রথম সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে টিকা নেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ওইদিন একই বুথে টিকা নেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান। আর সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ সেদিন ঢামেক হাসপাতালের বুথে টিকা নেন।