কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নানের গ্রামের বাড়িতে হামলা অভিযোগ উঠেছে। এ সময় হামলাকারীরা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলমকে পুকুরে ফেলে দেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কটিয়াদী উপজেলার চাঁনপুর গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
স্বাস্থ্য সচিবের পরিবারের লোকজনের দাবি, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সংসদ সদস্য পুলিশের সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদের কর্মী-সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছেন। হামলার সময় সচিব মো. আবদুল মান্নান নিজের ঘরে ঘন্টাখানেক অবরুদ্ধ ছিলেন। তার অভিযোগ ক্ষমতাসীন দলের এমপির নির্দেশে তার লোকজন এ ঘটনা ঘটায়।
স্থানীয়রা জানান, স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান ও নূর মোহাম্মদের বাড়ি একই গ্রামে। হামলার সময় স্বাস্থ্য সচিব বাড়িতে ছিলেন।
আর স্বাস্থ্য সচিবের ছোট ভাই নাসির উদ্দিনের দাবি, চাঁনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুরাদ মিয়ার নেতৃত্বে হামলাটি চালানো হয়। মুরাদ মিয়া ও তার সহযোগীরা সবাই এমপির অনুসারী।
তিনি জানান, নতুন করে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের জন্য তাদের পরিবারের সদস্যরা জমি দান করেছেন। ক্লিনিক নির্মাণে তার ভাই সহযোগিতা দিচ্ছেন। কিন্তু এটি নির্মাণের কথা স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জানানো হয়নি—এমন অভিযোগ তুলে ক্ষোভ দেখান এমপির অনুসারীরা। এই নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে এলাকায় উত্তেজনা চলছিল। এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য সচিব বাড়িতে আসেন।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, স্বাস্থ্য সচিব বেলা ১১টার দিকে নির্মাণকাজ দেখতে যাওয়ার পর ২০/২৫ জন লোক কাজ বন্ধ রাখতে বলেন। সচিবের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে তারা চলে যান। দুপুর ১টার দিকে অটোরিকশা ও মাইক্রোবাসে করে শতাধিক লোক লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে নির্মাণাধীন ক্লিনিকের সামনে গিয়ে সচিবের নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করেন এবং কাজ বন্ধ রাখতে বলেন।
খবর পেয়ে সচিবের বাড়িতে আসা কটিয়াদী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা তাকে পুকুরে ফেলে দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে র্যাব সদস্যরাও ঘটনাস্থলে আসেন।
হামলার কথা নিশ্চিত করে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ বলেন, হামলাকারীরা এসি ল্যান্ডকে লাঞ্ছিত করেছে। তিনি স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। হামলার পর স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান ঢাকায় চলে গেছেন। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
কটিয়াদী থানার ওসি এম এ জলিল বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হামলার ঘটনায় এখনও কোনো মামলা দায়ের হয়নি, কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।”
হামলার ঘটনার পর পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জিহাদুল কবিরও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।