1. shahinit.mail@gmail.com : dhaka24 : ঢাকা টোয়েন্টিফোর
  2. arifturag@gmail.com : ঢাকা টোয়েন্টিফোর : ঢাকা টোয়েন্টিফোর ডটনেট
মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৭:১২ অপরাহ্ন

সিরাজগঞ্জে তৃতীয় লিঙ্গের ঠাঁই হলো ‘প্রিয় নীড়’ আশ্রয়ন প্রকল্পে

Dhaka24 | ঢাকা টোয়েন্টিফোর -
  • প্রকাশ | বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ১০৯ পাঠক

পরিবার পরিজনে ঠাঁই নেই এদের। সমাজে তাদের অপায়া ভেবে দুরে সড়িয়ে দেয়। এদের বেঁচে থাকার তাগিদেই তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) মানুষেরা বাজার থেকে সবজি তোলা, দোকান থেকে ১০-২০ টাকা নেয়া, বিয়ে বাড়িতে নেচে-গেয়ে কিছু টাকা নেয়া-এভাবেই তাদের জীবন জিবিকা নির্বাহ করে। তাতেও আপত্তির শেষ নেই। বেঁচে থাকাই যেন বিষাদময়।

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদেরও অধিকার আছে, এমনটা পরিবার ও সমাজের কারোই দৃষ্টিতে নেই। তবে এই অভাগিদের ভাগ্য বদলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষে তাদের পাকা ঘর ও কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের স্বরস্বতী নদীর পাড়ে (তৃতীয় লিঙ্গের) আশ্রয়ন প্রকল্প ঘুরে দেখা যায়। এখানে তৃতীয় লিঙ্গের ৩০ জনকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে জমির মালিকানাসহ পাকা ঘর, গবাদি পশু ও উপার্জনের জন্য সেলাই মেশিন দেয়া হয়েছে। সেলাই মেশিন ও গবাদি পশু পালন প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।

বর্তমানে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা আশ্রয়ন প্রকল্পে গানে গানে হাসি-আনন্দে সময় পার করছেন। কেউ ছাগল, হাঁস-মুরগি ও কবুতর পালন করছেন। কেউ শাক-সবজি চাষ করছেন। কেউ আবার রান্না করছেন। এ যেন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন তারা।

পুনর্বাসিত হিজড়ারা বলেন, পরিবার ও সমাজের মানুষের অবহেলা, তাড়িয়ে দেয়া ও নির্যাতনের কথা। বাঁচার ইচ্ছে হতো না। তবে এখন অনেক ভালো আছেন। নতুন জীবন পেয়েছেন। নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন। এটি মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে। তিনি তাদের মমতায় জড়িয়ে নিয়েছেন।

আশা নামের এক হিজড়া বলেন, আমাদের বাবা-মা, পরিবার ও সমাজের লোক যেটুকু ভালো না বাসত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভালোবাসেন। সন্তানের মতো কোলে তুলে নিয়েছেন। তাকে দোয়া করি, প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘজীবী হোন। ঘরে ঘরে আমাদের মতো অসহায়ের সহায় হোন।

আলো নামের আরেক হিজড়া বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের এ ঘরে আসার পরও আশপাশের মানুষ প্রথমদিকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতো। আমাদের এখানে জায়গা দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছে। পরে ধীরে ধীরে তারা আমাদের সাথে কথা বলে ও সুখ-দুঃখ শেয়ার করে। এভাবেই তারা সাধারণ মানুষের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন। মানুষেরও তাদের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা পাল্টে ইতিবাচক হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ভুইয়া জানান, সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে আমরা ২০ জন হিজড়াকে পুনর্বাসন করেছি। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি তাদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনে জীবন মান উন্নত করার সব ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি আরও জানান, ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দিয়েছেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, সারাদেশে ১১ হাজার হিজড়া রয়েছে। তাদের পুনর্বাসনের কাজ চলমান।

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান মওদুদ আহমেদ জানান, প্রকল্পে বসবাসকারীরা নিজেদের স্বাবলম্বী করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন। আর তা দেখে নতুন আরো কিছু পরিকল্পনা নেবার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠাবেন বলে তিনি জানান।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ জানান, সরকারের উদ্যোগকে স্থায়ী রুপ দিতে জেলায় আরো যেসকল তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ আছে, তাদেরও এমন প্রকল্পের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। নিরাপদ আশ্রয় মেলায় এখন অনেকটাই স্বস্তিতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। নিজেদেরকে অন্যন্য উচ্চতায় নিতে নিজেরাই এখন তৈরী করছেন নিজেদের।

লাইক কমেন্ড ও শেয়ার করে সাথে থাকুন-

আরো খবর

© All rights reserved | 2016 dhaka24.net by |

Theme Customized BY WooHostBD