বাসায় অবস্থান করেও মধ্যরাতে বখাটেদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্রী। বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২ টায় ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজারের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে। চার ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বষের্র শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন , ‘বিষয়টি নিয়ে রাত থেকে আমি পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রাখছি। জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমাকে রাত সাড়ে তিনটার দিকে বিষয়টি জানিয়েছে। তাৎক্ষনণক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ভুক্তভোগী ছাত্রীরা জানান, ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজার সংলগ্ন এলাকার একটি বাসায় আমরা চারজন থাকি। এদিন রাত আনুমানিক ১২ টার দিকে তিন-চারজন যুবক বাসার জানালায় আঘাত করতে থাকে। একই সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এসময় আমাদের চিৎকারে বাড়ির মালিকসহ আশপাশে অবস্থানরত লোকজন চলে আসলে বখাটেরা পালিয়ে যায়।
আমরা বিভাগের শিক্ষক ও শেখ হাসিনা হল প্রভোস্ট ড. সেলিনা নাসরিনসহ শৈলকুপা থানা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সাঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করি। আমরা প্রাথমিকভাবে কারো কোন সাড়া পাইনি। পরে রাত ২টার দিকে আবারো বখাটেরা জানালার কাছে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে আবারও প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেনকে ফোন করি। তিনি ফোন রিসিভ করলে বিষয়টি অবহিত করি। এসময় বখাটেরা পালিয়ে যায়। ঘটনার চারঘন্টা পর ভোর ৪টার দিকে পুলিশ আসে। পুলিশ ঘটনা শুনে চলে যায়। এরপর সকালে সহকারী প্রক্টর আমাদের সাথে কথা বলে।
ছাত্রীদের অভিযোগ, রাত ১২টার ঘটনা প্রক্টর ও পুলিশকে অবহিত করার পরও রাত চারটায় ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। এসময় বড় দুর্ঘটনায় তো ঘটতে পারতো। এমন নিরাপত্তাহীনতায় আমরা থাকতে চাইনা। অতি দ্রুত জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান তারা। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, সকালের দিকে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীদের সাথে কথা বলেছি। ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতে প্রক্টর স্যার পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা চালিয়ে যাচ্ছেন।’
ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্পাদক বলেন, ‘পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনকে আমরা বারবার অভিহিত করেছি। দিনশেষে বহিরাগতদের দ্বারা ছাত্রীরা হেনস্তার শিকার হলো। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার হওয়া জরুরি।’