1. shahinit.mail@gmail.com : dhaka24 : ঢাকা টোয়েন্টিফোর
  2. arifturag@gmail.com : ঢাকা টোয়েন্টিফোর : ঢাকা টোয়েন্টিফোর ডটনেট
বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ০৭:১৫ অপরাহ্ন

যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরযশোরেশ্বরী কালীমন্দির

Dhaka24 | ঢাকা টোয়েন্টিফোর -
  • প্রকাশ | শুক্রবার, ১২ মার্চ, ২০২১
  • ১৩২ পাঠক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ২৭ মার্চ সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দির পরিদর্শন করবেন। সেখানে তিনি মাত্র ২০ মিনিট অবস্থান করবেন।

মোদিজির আগমন উপলক্ষে নতুন রূপে সাজতে শুরু করেছে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত সুন্দরবন উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর। চলছে সাজ সাজ রব। এরই মধ্যে মোদির আগমনের খবরে শ্যামনগরের মাতুয়া গোষ্ঠীর মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। রাষ্ট্রীয়ভাবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তারা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো এক সফরসূচিতে জানানো হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ২৬-২৭ তারিখে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফরকালীন বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে সাতক্ষীরা ও গোপালগঞ্জ সফর করবেন।

২৭ তারিখ সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে তিনি শ্যামনগরের ঈশ্বরীপুরে অবস্থিত যশোরেশ্বরী কালীমন্দির পরিদর্শন শেষে ১০টা ১০ মিনিটে সাতক্ষীরা ত্যাগ করবেন।

১০টা ৫০ মিনিটে গোপালগঞ্জে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ পরিদর্শন, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও বৃক্ষ রোপণ করবেন। এরপর ১১টা ৩৫ মিনিটে তিনি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানির ওড়াকান্দি মন্দির পরিদর্শন করবেন।

ইতোমধ্যে সাতক্ষীরার ডিসি এস এম মোস্তফা কামাল জেলার বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করেছেন। এর আগে জেলা প্রশাসক ২৭ ফেব্রুয়ারি ঈশ্বরীপুর কালীমন্দির পরিদর্শন করেন।

ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও মোদির নিরাপত্তা দলের সদস্যরা গত সপ্তাহে শ্যামনগরে সরজমিন ঘুরে দেখেছেন। মন্দিরের অবকাঠামো, যাতায়াতে পথ, নিরাপত্তাসহ সবকিছু রেকি করে গেছেন তারা। সাতক্ষীরা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে ওই মন্দির এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যাপারে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র। যশোরেশ্বরী কালীমন্দির ও এর আশেপাশের এলাকা বিশেষ গোয়েন্দা নজরদারিতে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে সেখানে তিনটি হেলিপ্যাড প্রস্তুত করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরা জেলার বিভিন স্থানে মতুয়া সম্প্রদায়ের ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ রয়েছে। তাদের মধ্যে কেবলমাত্র শ্যামনগর উপজেলায় রয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ।

যশোরেশ্বরী কালীমন্দির পুরোহিত দিলীপ মুখার্জি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। তিনি জানান, এ মন্দিরে প্রতি বছর শ্যামা কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া প্রতি শনি ও মঙ্গলবার এ মন্দিরে পূজা অর্চনা হয়ে থাকে। এসব পূজা অর্চনায় শত শত ভক্তের সমাগম ঘটে এ মন্দিরে।

জেলা মতুয়া সম্প্রদায়ের সভাপতি ও শ্যামনগর উপজেলার সভাপতি কৃষ্ণান্দ মুখার্জি জানান, নরেন্দ্র মোদির আগমন উপলক্ষে মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে।

শ্যামনগরের যশোরেশ্বরী কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে ইতিহাস থেকে বিভিন্ন রকম মতভেদ রয়েছে বলে জানা যায়। যশোহর খুলনার ইতিহাস প্রণেতা সতীশ চন্দ্র মিত্র এ মন্দির স্থাপনা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উল্লেখ করেছেন। তাতে বলা হয়, ১৫৬০- ৮০ সাল পর্যন্ত রাজা লক্ষ্মণ সেনের রাজত্বকালে তিনি স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে ঈশ্বরীপুর এলাকায় একটি মন্দির নির্মাণ করেন। মন্দিরটি নির্মাণের পর সেটি বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেয়া হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে মন্দিরটি জঙ্গলাকীর্ণ হয়ে ওঠে। সে সময় শ্যামনগরের ধুমঘাট ছিল বাংলার ১২ ভূঁইয়ার রাজা প্রতাপাদিত্যর রাজধানী। রাজা প্রতাপাদিত্য এ সময় দেখতে পান ওই জঙ্গল থেকে এক আলোকরশ্মি বেরিয়ে আসছে। তিনি তখন মন্দিরটি খোলার নির্দেশ দেন। মন্দিরটি খুলেই সেখানে দেখা মেলে বন্ড ভৈরবের আবক্ষ শিলামূর্তি। তখন থেকে সেখানে পূজা-অর্চনা শুরু হয়।

ইতিহাসের তথ্য অনুযায়ী আরো জানা যায়, দক্ষ রাজার কনিষ্ঠ কন্যার নাম ছিল সতীবালা। তিনি জন্ম থেকে মহাদেবের পূজারিণী ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি স্বেচ্ছায় মহাদেবকে বিবাহ করেন। এতে দক্ষ রাজার ঘোর আপত্তি ছিল। এক অনুষ্ঠানে দক্ষ রাজার উপস্থিতিতে মহাদেব আসেন। কিন্তু মহাদেব দক্ষ রাজাকে তার শ্বশুর বলে পরিচয় দেননি। এতে তিনি চরম অপমানিত হন। পরে শুরু করেন দক্ষযজ্ঞ। এতে সতীবালা ও মহাদেব নিমন্ত্রিত ছিলেন না। এতে অপমান বোধ করেন সতীবালা। কিছুক্ষণ পরেই সতীবালা দেহত্যাগ করেন। এ খবর পেয়ে কৈলাস থেকে দ্রুতবেগে নেমে আসেন মহাদেব। তিনি দক্ষ রাজার মুন্ডু কর্তন করে বলির জন্য নিয়ে আসা ছাগলের মুন্ডু কেটে সেখানে বসিয়ে দিয়ে দক্ষযজ্ঞ লণ্ডভণ্ড করে দেন। পরে তিনি মৃত স্ত্রী সতীবালাকে কাঁধে নিয়ে কৈলাস পাহাড়ে চলে গিয়ে ক্ষোভে ও দুঃখে ব্রহ্মান্ড ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেন। এ খবর পেয়ে ব্রাহ্ম ও নারায়ণ সিদ্ধান্ত নিলেন মহাদেবকে ঠাণ্ডা করতে হলে তার কাছ থেকে সতীবালার মৃতদেহ সরিয়ে নিতে হবে। সে অনুযায়ী ত্রিশূল দিয়ে সতীবালাকে ৫১ খণ্ড করে ত্রিশূলে ঘোরানো হয়। এর এক খণ্ড এসে পড়ে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামে। সেখানেই প্রতিষ্ঠিত হয় যশোরেশ্বরী কালীমন্দির। অপর খণ্ডগুলো পশ্চিমবঙ্গের কালীঘাট, আফগানিস্তান, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল।

লাইক কমেন্ড ও শেয়ার করে সাথে থাকুন-

আরো খবর

© All rights reserved | 2016 dhaka24.net by |

Theme Customized BY WooHostBD