রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে আটটার একটু আগে এ ভূকম্পন অনুভূত হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৩৯৭ কিলোমিটার দূরে আসামে। কয়েকদিন ধরেই সারা দেশে তীব্র দাবদাহ চলছে। এর মধ্যেই ভূমিকম্পের এ ঘটনা ঘটল।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ভূমিকম্পের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আবহাওয়া অধিদফতরের ভূমিকম্প বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামে। এটি ছিল শক্তিশালী ভূমিকম্প। এর মাত্রা ছিল ৬.০ রিখটার স্কেল।’
আর মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, ভূমিকম্পে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ২। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামের গুয়াহাটির কাছে শোনিতপুরের ধেকিয়াজুলি থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে। ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ২৮ দশমিক ৯ কিলোমিটার। তাৎক্ষণিকভাবে এ ভূমিকম্পে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি এবং কোনো সুনামি সতর্কতা নেই।
স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে কম্পন অনুভূত হয় উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কালিম্পং প্রভৃতি জেলায়। হঠাৎ কেঁপে ওঠে পায়ের তলার মাটি। এছাড়া মালদা, মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলাতেও কম্পন অনুভব করেন বাসিন্দারা। এমনকি কলকাতাতেও মৃদু কম্পন অনুভূত হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও মিয়ানমার, ভুটান ও চীনের বিভিন্ন স্থানেও এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তবে এ ভূমিকম্পে কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনও পাওয়া যায়নি।
দুই দফায় বেশ কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী এ ভূকম্পনের পর আরও কয়েকটি প্রতিঘাত টের পাওয়া যায়। এ সময় আতঙ্কে রাজধানীসহ সারাদেশেই ঘর বাড়ি, দোকানপাট ও প্রতিষ্ঠান ছেড়ে খোলা রাস্তায় নেমে আসে মানুষ। অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছোটাছুটি করে।
এছাড়া সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, গাজীপুর, জামালপুর, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
হবিগঞ্জ শহরে সকাল ৮টা ২২ মিনিটের দিকে অন্তত ১৫ থেকে ১৬ সেকেন্ড ভূকম্পন হয়। এ সময় ভবনগুলো কিছু সময় ধরে কাঁপছিল। ঘুমন্ত মানুষজন ভূমিকম্প টের পেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকার বহুতল ভবনে দুই দফায় কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের সময় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত কর্মস্থলে ছিলেন শাপলা আহমেদ ও অরূপ রায়। তাদের অফিস ১২ তলায়। তারা জানান, ভূমিকম্পের সময় তারা প্রচণ্ড দুলুনি অনুভব করেছেন। ফুলের টব, টিভি সবকিছু এ সময় দুলছিল।
রাজধানীর মিরপুরবাসী আহসান ও ইয়ানা জানান, তাদের বাড়ি ৭ তলায়, ভূমিকম্পের সময় তারা প্রচণ্ড দুলুনি অনুভব করেছেন। এ সময় ফার্নিচার ও টিভিসহ সবকিছু দুলছিল।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ভারতের আসাম রাজ্যে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।