1. shahinit.mail@gmail.com : dhaka24 : ঢাকা টোয়েন্টিফোর
  2. arifturag@gmail.com : ঢাকা টোয়েন্টিফোর : ঢাকা টোয়েন্টিফোর ডটনেট
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১২ অপরাহ্ন

বিশ্ব শ্রমিক দিবস আজ : নতুন ভোরের অপেক্ষায় শ্রমিকরা

Dhaka24 | ঢাকা টোয়েন্টিফোর -
  • প্রকাশ | শনিবার, ১ মে, ২০২১
  • ১৩৮ পাঠক

গোটা পৃথিবী আজ একটি ভয়ংকর অণুজীবের বিরুদ্ধে লড়ছে। অদৃশ্য এই শত্রুর বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধ কবে শেষ হবে তা কেউ জানে না। প্রাণঘাতী এই করোনাভাইরাসের ভয়ে ঘরবন্দি মানুষ। কবর-শ্মশান-হাসপাতাল সব যেন একাকার। সারা বিশ্ব আজ স্তব্ধ, নির্বিকার। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে খুঁড়িয়ে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে সারা বিশ্বের কোটি মানুষ।
দেশজুড়ে বর্তমানে চলছে কঠোর বিধিনিষেধ। এরই মাঝে আজ সেই বিশেষ দিন। যে দিনটা শুধুই শ্রমিকদের। প্রতিবছর যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকে বিশ্ববাসী। গত বছরের মতো এবারও করোনার ভয়াল থাবায় তা থমকে যায়।
যাদের সারা বছর কাটে উদয়াস্ত পরিশ্রম করে। একটি দিন। কাজ থেকে ছুটির দিন। কর্মহীন, বেকার হয়ে ঘরে বসে থাকার দিন। আজ পয়লা মে। বিশ্ব শ্রমিক দিবস। মে দিবস। প্রতিবছর সারা বিশ্বে এই দিনটি পালিত হয় প্রতীকী দিন হিসেবে। শ্রমজীবী মেহনতি মানুষদের দিন হিসেবে ।
মে দিবস হাজার হাজার শ্রমিকের পথচলা মিছিলের কথা। একই পতাকা তলে দাঁড়িয়ে আপোষহীন সংগ্রামের কথা। মে দিবস দুনিয়ার সব শ্রমিকদের এক হওয়ার দিন। আন্তর্জাতিক সংগ্রাম আর ভ্রাতৃত্বের দিন। মে দিবস, শ্রমজীবী মানুষের কাছে জাগরণের গান, সংগ্রামের ঐক্য ও গভীর প্রেরণার দিন।
মে দিবস আসলে শোষণমুক্তির অঙ্গীকার, ধনকুবেরদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সমাজতন্ত্র গড়ে তোলার শপথ নেয়ার দিন। ইতিহাসের পাতায় চোখ ফেরালেই আমরা জানতে পারি, শ্রমজীবী মানুষদের সেই আন্দোলনের কথা।
মেহনতি মানুষদের এই আন্দোলনের পথ কখনও মসৃণ ছিল না। ছিল নানা ঘটনার ঘাত-প্রতিঘাতে মোড়া। জুলুম, অত্যাচার, প্রতিরোধ, ধর্মঘট, মিছিল, সংগ্রামের গল্প রয়েছে এই দিনটি ঘিরে।
১৮৮১ সালে নভেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘আমেরিকান ফেডারেশ অব লেবার’। ১৮৮৪ সালের ৭ অক্টোবর সেখানে চতুর্থ সম্মেলনে গৃহীত হয় এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, বলা হয় ১৮৮৬ সালের ১ মে থেকে সব শ্রমজীবী মানুষ আট ঘণ্টার বেশি কোনওভাবেই কাজ করবে না। ওই দিনটিতে তাই পাঁচ লক্ষ শ্রমিক প্রত্যক্ষভাবে ধর্মঘটে যোগ দেন।
শাসকদল এই ঐক্যবদ্ধ বিশাল শ্রমিক সমাবেশ ও ধর্মঘট দেখে ভয়ে পিছিয়ে যায়। ৩ মে ম্যাককর্মিক হার্ভাস্টার কারখানায় নির্মম পুলিশি আক্রমণ চলে, তাতে প্রাণ হারান ৬ জন নিরীহ শ্রমিক। সেই ঘটনা ইতিহাসের পাতায় চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এর পরের দিন অর্থাৎ ৪ মে হে মার্কেট স্কোয়্যারে আয়োজিত হয় এক বিশাল প্রতিবাদ সভা। পুলিশ এই সভায় গুলি চালালে শহিদের রক্তে রাঙা হয় হাতের পতাকা। গ্রেফতার করা হয় চারজন শ্রমিক নেতাকে। বিচারের নামে শুরু হয় প্রহসন, জারি করা হয় ফাঁসির আদেশ।
দেশকালের গণ্ডি পেরিয়ে এই নৃশংস বর্বরতার খবর পৌঁছয় দুনিয়ার সব মেহনতি শ্রমজীবি মানুষের কানে। ১৮৮৯ সালে জুলাই মাসে প্যারিসে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রথমদিনের অধিবেশনেই সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয় যে ১৮৯০ সালে ১ মে থেকে প্রতি বছর শ্রমিকশ্রেণির আন্তর্জাতিক সংহতি, সৌভ্রাতৃত্ব ও সংগ্রামের দিন হিসেবে এই দিনটি পালিত হবে। এভাবেই ১৮৮৬ সালের ঐতিহাসিক মে দিবস ১৯৯০ সালে আন্তর্জাতিক মে দিবসে পরিণত হল।
আজ এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের লড়াই সবচেয়ে কঠিন। এই লড়াই জীবনে বেঁচে থাকার লড়াই। এই আর্থিক বিপর্যয়ের মুহূর্তে ইতিমধ্যেই কাজ হারিয়েছেন বহু শ্রমজীবী মানুষ। পরিসংখ্যান বলছে করোনা পরবর্তী সময়ে কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। তাদের জীবনে নেমে আসবে ভয়ঙ্কর কালো দিন।
করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই কাজ হারিয়ে দেশে দলে দলে ফিরে এসেছে বহু মানুষ। তাদের সেই অসহায় ছবি প্রতিনিয়ত ভেসে উঠছে সংবাদ মাধ্যমের পর্দায়। অনেকে আবার ফিরতে না পেরে আটকে রয়েছে বিভিন্ন দেশে। কোনওরকমে সামান্য সাহায্যে তাদের মুখে জুটছে আহার। সেটাও অনিশ্চিত। কারোর কারোর হয়তো সেটাও জুটছে না নিয়মিত।
আজ এই ভয়ঙ্কর সঙ্কটের সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন এই সব শ্রমিকদের যেন কাজ থেকে ছাঁটাই করা না হয়। কিন্তু বাস্তবটা ঠিক তার উল্টো। ভয়াবহ আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে তাদের ভবিষ্যৎ আজ সম্পূর্ণই অনিশ্চিত।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে সারা দেশ কবে মুক্তি পাবে, তার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে দেশের প্রতিটি মানুষ। তবে একদিন না একদিন করোনাভীতি থেকে মুক্ত হবে, আসবে আবার নতুন ভোর। সেই দিনের অপেক্ষায় সবাই।

লাইক কমেন্ড ও শেয়ার করে সাথে থাকুন-

আরো খবর

© All rights reserved | 2016 dhaka24.net by |

Theme Customized BY WooHostBD