নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে নিজ ঘরে নাজমুল সাকিব নাবিল (২০) নামে এক মাদ্রাসাছাত্র খুন হওয়ার পরের দিন পলাতক মা নাছরিন বেগমের (৪০) লাশ নরসিংদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুন) বেলা ১২টায় বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী সদর মডের থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান।
তিনি বলেন, হত্যার ঘটনার পর নিহত নাছরিন বেগম গা ডাকা দিতে নারায়ণগঞ্জ থেকে নরসিংদী আসেন। তারপর নিজের নাম পরিচয় গোপন রেখে নিজেকে রেহানা আক্তার পরিচয় দিয়ে নরসিংদীর নিরালা আবাসিক হোটেলে আশ্রয় নেন তিনি। সোমবার ওই আবাসিক হোটেলেই যেকোনো সময় তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা পুলিশের। খবর পেয়ে সোমবার বিকেল ৩টায় পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে।
এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান পিপিএম বলেন, নিহত নাছরিন বেগম ঘটনার রাত থেকেই পলাতক ছিলেন। নিজের নাম পরিচয় গোপন রেখে তিনি নরসিংদী গিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। খবর পেয়েছি সেই আবাসিক হোটেলে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে নিহতের আসল পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
এর আগে গত রোববার (৩০ মে) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১ নম্বর ওয়ার্ডের পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকায় নিজ ঘরে মাদ্রাসাছাত্র হত্যার ঘটনা ঘটে।
নিহতের বাবা ছগির আহমেদ ইসলামী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখায় কর্মরত। তিনি জানান, রোববার সকালে তিনি ব্যাংকে তার কর্মস্থলে যান। রাত ৮টায় বাসায় ফিরে ঘর তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরে তার কাছে থাকা অতিরিক্ত চাবি দিয়ে তালা খুলে ঘরে ঢুকে দেখতে পান রক্তাক্ত অবস্থায় তার ছেলে পড়ে আছেন। রক্তাক্ত অবস্থায় দ্রুত ওই মাদ্রাসাছাত্রকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহতের বুকে, পিঠে ও মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহত নাবিল ডেমরার গলাকাটা এলাকার দারুণ নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন।
ছগির আরও জানান, তার স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন। তার সঙ্গে কারো শত্রুতা নেই। মাঝে মাঝে তার স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। ধারণা করা হচ্ছে তার স্ত্রী ছেলেকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে।
ছগির আহমেদের গ্রামের বাড়ি সোনারগাঁয়ের সনমান্দি ইউনিয়নের খৈতারগাঁও এলাকায়। পরিবার নিয়ে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জে পাইনাদী নতুন মহল্লায় বসবাস করছেন।
ঘটনার পর নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল-ক) মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।