ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানসহ চারজন নিখোঁজের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেছেন, তাদেরকে উদ্ধারে অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে ডিবি। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুপুরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ত্ব-হাসহ চারজন ব্যক্তি নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে রংপুরে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সঙ্গে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশও এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
রাজধানীর রংপুর থেকে ফেরার পথে গাবতলী এলাকা থেকে গত বৃহস্পতিবার (১০ জুন) ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান নিখোঁজ হয়েছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এদিকে নিখোঁজের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। যদিও কীভাবে, কোথা থেকে ত্ব-হাসহ সফরসঙ্গীরা নিখোঁজ হয়েছেন, তা এখনো নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না পুলিশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আবু ত্ব-হার স্ত্রী ও তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে খুঁজে বের করতে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা। তারা কিছু সুনির্দিষ্ট পয়েন্টকে সামনে রেখে তাদের উদ্ধারের জন্য কাজ করছেন।
তবে বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সকালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত আবু ত্ব-হার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে তদন্ত কাজ চলছে বলে জানা যায়।
গত সোমবার (১৪ জুন) আবু ত্ব-হার স্ত্রী সাবেকুন নাহারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করছে ডিএমপির পল্লবী থানা।
গতকাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে নিখোঁজ আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানসহ চারজনকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন আদনানের স্ত্রী সাবিকুন্নাহার।
সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘আমার স্বামী যদি কোনো অন্যায় করে থাকেন তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে বিচার করা হোক। সে নিখোঁজ কেন? আমি শুধু তার সন্ধান চাই। তাকে যদি আমার কাছে এনে দিতে না পারেন, তাহলে আমাকে তার কাছে নিয়ে যান। আমি একজন স্ত্রী হিসেবে জানি না আমার স্বামী কোথায়। আপনাদের কাছে হাতজোড় করে বলছি, আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিন। এর বেশি কিছু চাই না। আমি তাকে অনেক ভালোবাসি।’
ত্ব-হার স্ত্রী বলেন, ‘খুতবা ও বক্তব্যে জিও পলিটিক্স নিয়ে কথা বলতেন আমার স্বামী। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতেও কথা বলতেন। তাহলে কী জিও পলিটিক্স নিয়ে কথা বলাই তার জন্য কাল হলো? এখন এমন অনেক কিছুই মনে হয়। এটা ইন্টারন্যাশনাল গোয়েন্দাদের বিষয় কিনা তাও মনে হয়। মুসলিমরা সবাই কিন্তু আল-আকসাকে ভালোবাসে। তাই ইসরায়েলের মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে তিনি মুসলমানদের পক্ষে কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি কোনো দল বা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।’