সারাদেশে উদ্বোধন করা হলো ডিজিটাল কোরবানির পশুর হাট। মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় ডিজিটাল পশুর হাট। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে দেশব্যাপী ডিজিটাল হাট উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম। আইসিটি ডিভিশন ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যৌথ ব্যবস্থাপনায় এ অনলাইন হাট পরিচালনা করা হবে। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
প্রধান অতিথি শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। এ ডিজিটাল হাটের মাধ্যমে একদিকে বিক্রেতারা ন্যায্যমূল্য পাবেন। অন্যদিকে ক্রেতারা পাবেন সঠিক পশু কেনার নিশ্চয়তা। হাটে না গিয়ে নিজেকে নিরাপদ রেখে ঘরে বসে কোরবানির পশু পাওয়ার এ সুবিধা পাচ্ছে দেশের মানুষ, কারণ বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছে। ডিজিটালি সক্ষম বলেই এ হাটের মাধ্যমে মানুষকে আজ এতটা সুরক্ষা দেওয়ার এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার এ কার্যক্রমে বিভিন্ন বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা নিরলসভাবে কাজ করছে। কৃষক ও খামারিরা খাদ্য ও পশু উৎপাদন করে দেশকে খাদ্য ও পশু উৎপাদনে স্বাবলম্বী করেছে।
পলক আরও বলেন, দেশের ১৮৪৩টি অনলাইন শপের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের ২৪১টি হাট একটি প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়েছে। এতে ই-ক্যাব ও একশপ সার্বিক সহযোগিতা করছে। তিনি ডিজিটাল হাটকে নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব বলে অভিহিত করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ বলেন, সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্ঠায় ও সহযোগিতায় সরকার গবাদি পশুর ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। গত বছর ১ কোটি ১৮ লাখ কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল,কিন্তু করোনার কারণে বিক্রি হয়েছে ৯৪ লাখ পশু। চলতি বছর ১ কোটি ১৯ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু আছে। এ বছর ১৮৪৩টি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে রেকর্ড সংখ্যক পশু অনলাইনে বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এটুআই’এর প্রকল্প পরিচালক ড. আব্দুল মান্নান পিএএ পিডি বলেন, সরকারি সেবাগুলো তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলেছে। ডিজিটাল হাটের ধারণা এখন উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে। গত বছর এই উদ্যোগ শুরু হলে যে মাইলফলক তৈরি হয়েছে। এবার সব প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে এই ডিজিটাল হাট প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের জন্য সুফল বয়ে আনবে।
এটুআই‘এর যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীন জাতিসত্তা উপহার দিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রী একটি সমৃদ্ধ দেশ উপহার দিতে কাজ করছেন। কোনোদিন হয়তো কেউ চিন্তা করেনি তথ্য প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ আজ এ অবস্থানে থাকবে। কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে আজকের ডিজিটাল হাট যুগোপযোগী ভূমিকা রাখবে।
ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, সম্পদের সুষম বণ্টনে যদি তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করা যায়, তাহলে এর সুফল প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। ই-ক্যাব মহামারির শুরু থেকে ডিজিটাল হাট, লকডাউন ম্যানেজমেন্ট, টিসিবির পণ্য বিক্রি সব বিষয়ে সরকার এবং জনগণের পাশে আছে।
গত ৩০ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণলায়ে অনলাইনে পশু বিক্রি সংক্রান্ত একটি গাইড লাইন প্রকাশ করে। আজকের উদ্বোধনের মাধ্যমে গত ৪ জুলাই চালু হওয়া ঢাকা মহানগর কেন্দ্রিক ডিজিটাল হাটকে মূলত দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করা হলো। অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী স্ক্রো-সেবার মাধ্যমে একটি গরু কেনেন।
ডিজিটাল হাটের লিংক: https://digitalhaat.net/। কলসেন্টার থেকে কল করে যেকোনো তথ্য জানতে ও অভিযোগ করতে এই নাম্বারে 9614102030 কল করতে পারবেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা । ঈদের আগের দিন পশু ডেলিভারি দেয়ার শেষ তারিখ। একই শহরে হলে বিক্রেতারা ঈদের আগের দিন পর্যন্ত পশু বিক্রি করতে পারবেন।