যশোরের চৌগাছায় পাটক্ষেতে উদ্ধার হয় স্কুলছাত্র এহতেশাম মাহমুদ রাতুলের (১৮) লাশ। সেই হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। শ্বশুরের অপমানের জেরেই শালাকে হত্যা করেছেন ভগ্নিপতি শিশির আহমেদ। নিজের স্ত্রীর ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে রাতুলকে গাঁজা সেবন ও কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করান শিশির। একপর্যায়ে রাতুলের মুখে স্কচটেপ মেরে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাটক্ষেতে ফেলে রেখে যান।
শনিবার (১৭ জুলাই) প্রেস ব্রিফিংয়ে যশোর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাঙ্গীর আলম এসব তথ্য জানান।
নিহত এহতেশাম মাহমুদ রাতুল (১৮) মহেশপুর উপজেলার বাজিপোতা গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে ও স্থানীয় সামবাজার এম.পি.বি. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত ১২ জুলাই চৌগাছা উপজেলার লস্করপুর শ্মশান মাঠে পাটক্ষেত থেকে মুখে স্কচটেপ মোড়ানো রাতুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার হলেও পরবর্তীতে স্বজনেরা শনাক্ত করেন। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত রাতুলের আপন ভগ্নিপতি শিশির আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভিকটিমের মোবাইল ফোন, পরিহিত বস্ত্র ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার (১৬ জুলাই) চট্টগ্রামের সিএমপি বন্দর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি শিশির আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মতে একই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে যশোরের চৌগাছা থানা লস্করপুর শ্মশান মাঠে ঘটনাস্থলের অদূরে একটি পাটক্ষেত থেকে ভিকটিমের পরিহিত বস্ত্র এবং হত্যায় ব্যবহৃত স্কচটেপ ও হ্যান্ডগ্লাভস উদ্ধার করা হয়। একই দিন ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর থানাধীন কাশিপুর গ্রামে গ্রেফতার আসামির বসতবাড়ি থেকে মামলার ভিকটিমের ব্যবহৃত সিমটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশির আহমেদ জানিয়েছেন, আসামির শ্বশুর (নিহতের বাবা) একদিন বাড়িতে ডেকে নিয়ে তাকে অপমান করে। এতে শিশির ক্ষুব্ধ হন। সেই থেকে শ্বশুরের একমাত্র ছেলে রাতুলকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন তিনি। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, ভিকটিমের বোনের (আসামির স্ত্রী) মোবাইল ফোন দিয়ে রাতুলকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। গাঁজা সেবন ও কোমল পানীয়ের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করান।
একপর্যায়ে রাতুলের নাকমুখে স্কচটেপ মুড়িয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন শিশির আহমেদ। রাতুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থলে লাশ ফেলে রাখেন ও ভিকটিমের গায়ের কাপড় খুলে ঘটনাস্থলের পাশে আরেকটি পাটক্ষেতে ফেলে রাখেন। ভিকটিমের মোবাইল থেকে সিম খুলে আসামির বসতকক্ষে ইটের নিচে পুঁতে রাখেন।