যশোর শহরের শংকপুর এলাকার শাওন ওরফে টুনি শাওন হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, চাইনিজ কুড়াল ও মোটরসাইকেল। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৬ জুলাই) দুপুরে জেলা পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। গ্রেফতাররা হলেন- শহরের শংকরপুর আশ্রম রোডের মুরগির ফার্ম এলাকার রবিউল ইসলাম সরদারের ছেলে ইয়াসিন হাসান ওরফে রানা (২০), যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ইস্তা গ্রামের মৃত আবদুল কাদের বিশ্বাসের ছেলে হাফিজুর রহমান বিশ্বাস ওরফে ভ্যাবো (৩০), ঝিকরগাছা উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের আমিন মোড়লের ছেলে জয় (১৯), শংকরপুর এলাকার আবদুর রাজ্জাকের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২০), মিন্টু শেখের ছেলে বিল্লাল হোসেন মৃদুল (২০) ও মৃত কটারের ছেলে মো. মানিক (২৬)।
যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপন কুমার সরকার জানান, নিহত শাওন ও হত্যাকারীরা পরস্পর সহযোগী চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসী। তাদের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব ছিল। বিরোধের জেরে ঘটনার দিন শাওনকে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে জখম করে। জীবন বাঁচাতে কমিউনিটি পুলিশিং অফিসে ঢুকলেও রক্ষা পায়নি। ঈদের কারণে ডিফেন্সপার্টির সদস্যরা সেখানে ছিল না। একইসঙ্গে ওই এলাকা জনশূন্য ছিল। এ সুযোগটি নেয় হত্যাকারী সন্ত্রাসীরা।
তিনি আরও জানান, গত ২২ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে যশোর শহরের শংকরপুর জমাদ্দারপাড়া ছোটনের মোড়ে জনশূন্য কমিউনিটি পুলিশিং অফিসে শংকরপুর জমাদ্দার পাড়ার আব্দুল হালিম শেখের ছোট ছেলে চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসী শাওনকে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে, পিঠে, গলায় কুপিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুল হালিম শেখ ৭/৮ জনকে সন্দেহ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হওয়ায় জেলার পুলিশ সুপার রহস্য উদঘাটন ও দ্রুত আসামি গ্রেফতারের জন্য থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশকে কঠোর নির্দেশনা দেন। ডিবি ও থানা পুলিশের যৌথ টিম গত রোববার (২৫ জুলাই) অভিযান চালিয়ে হত্যকাণ্ডে জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে দু’জন প্রত্যক্ষভাবে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু, চাইনিজ কুড়াল ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ সার্কেল) বেলাল হোসাইন, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপন কুমার সরকার প্রমুখ।