ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে তার ৭০ বছরের শাসনামলের অবসান হয়েছে। বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুর পর ব্রিটেনের রাজা হয়েছেন তার ছেলে চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
বিবিসির খবর বলছে, রানি এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে, সাবেক প্রিন্স অফ ওয়েলস, চার্লস এখন নতুন রাজা হবেন। ১৪টি কমনওয়েলথ রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে দেশের শোক-পালনে নেতৃত্ব দেবেন।
কয়েক প্রজন্ম ধরে যুক্তরাজ্যকে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন রানি এলিজাবেথ। দায়িত্বের প্রতি তার নিষ্ঠার কারণে বিশ্বজুড়ে মানুষের শ্রদ্ধা ও প্রশংসা অর্জন করেছেন।
সংবাদমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম- সবখানেই বহুল আলোচিত এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন এলিজাবেথ। ৭০ বছরের শাসনামলে ১৫ জনকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দিয়ে অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন তিনি। বয়সটা নব্বইয়ের ঘরে হলেও, সদা হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন এলিজাবেথ।
১৯৫২ সালে সিংহাসনে আরোহন করেছিলেন তিনি। এই বছর সিংহাসন আরোহণের ৭০ বছর তিনি পালন করেছেন। অনেকের নতুন এলিজাবেথীয় যুগ বলে পরিচিত অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে বৃহস্পতিবার।
বিবিসি জানায়, বৃহস্পতিবার রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর খবর ঘোষণা করার সময়ই রাজ পরিবার থেকে করা টুইটে চার্লসকে রাজা এবং ক্যামিলাকে ‘দ্য কুইন কনসোর্ট’ বলে উল্লেখ করা হয়। মাত্র তিন বছর বয়সে চার্লস যুবরাজ হয়েছিলেন এবং তিনি ব্রিটিশ সিংহাসনের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে যুবরাজ ছিলেন।
বয়সের কারণে রানি এলিজাবেথ দুর্বল হয়ে পড়ায় চার্লস আগে থেকেই বেশকিছু দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। বিশেষ করে এই বছরে। মায়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে দেওয়া বার্তায় চার্লস বলেন, ‘এটা আমার এবং আমার পরিবারের জন্য সবচেয়ে দুঃখের মুহূর্ত।’
এলিজাবেথ আলেকজান্দ্রা মেরি উইন্ডসর জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৬ সালের ২১শে এপ্রিল। তাঁর বাবা অ্যালবার্ট, ডিউক অফ ইয়র্ক এবং মা সাবেক লেডি এলিজাবেথ বোওজ -লিওন-এর তিনি ছিলেন প্রথম সন্তান। অ্যালবার্ট ছিলেন পঞ্চম জর্জের দ্বিতীয় সন্তান।
১৯৫৩ সালের জুন মাসে দ্বিতীয় এলিজাবেথের সিংহাসন আরোহণ ও শপথ গ্রহণ লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখেন টেলিভিশনের পর্দায়। যুদ্ধের পর ব্রিটেন তখন কঠিন অর্থনৈতিক সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তখন ভাষ্যকাররা তার অভিষেককে ব্যাখ্যা করেছিলেন ‘নতুন এলিজাবেথান যুগ’ হিসাবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলে ব্রিটিশ উপনিবেশ তখন গুটিয়ে এসেছে। নতুন রানির দায়িত্ব নিয়ে তিনি যখন ১৯৫৩ সালে কমনওয়েলথ দেশগুলোতে দীর্ঘ সফরে বের হন। তখন ভারতীয় উপমহাদেশসহ অনেক দেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়েছে।