দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে বইছে উত্তরের শীতল বাতাস। সকাল পর্যন্ত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঝরতে থাকে কুয়াশা। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন জেলার খেটে খাওয়া লোকজন। কনকনে শীতে গরম কাপড় গায়ে জড়িয়েই কাজে বের হতে হচ্ছে লোকজনকে।
শনিবার জেলার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রের্কড করা হয়েছে। যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন এবং চলতি মৌসুমে পঞ্চগড়েও সর্বনিম্ন। গত দুসপ্তাহ ধরে এই জেলায় তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে উঠানামা করছে। এর মধ্যে তাপমাত্রা আরও কমে আসবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। একই সঙ্গে আগামী সোমবার থেকে হালকা বৃষ্টিপাতসহ আকাশ মেঘলা থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস।
জানুয়ারির শুরু থেকেই পঞ্চগড়সহ আশপাশের জেলাগুলোতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অফিসের হিসাবে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেই মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। সে হিসেবে টানা কয়েকদিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর পঞ্চগড়ে মাঝারি ও রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগের অন্য জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এদিকে শীতে কর্মহীন হয়ে পড়া ও শীতজনিত বিভিন্ন রোগ বালাই মানুষকে অসহায় করে ফেলেছে। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্ক মানুষদের দুর্ভোগ চরমে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পঞ্চগড় শহরের হোটেল শ্রমিক শরিফুল ইসলাম জানান, শীতে কাজে যেতে কষ্ট হচ্ছে। কাজ-কর্ম একেবারেই কমে গেছে, তাই সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে।
রামের ডাঙ্গা এলাকার দিনমজুর আকবর আলী বলেন, গত ১৫ দিন ধরে ঠাণ্ডার কারণে তেমন কোনো কাজ মিলছে না।
হরেক মালের ব্যবসায়ী সুলতান জানান, শীতের মধ্যেই সাইকেলে করে মালামাল নিয়ে গ্রামে যেতে হচ্ছে কিন্ত তীব্র শীত এবং ঘন কুয়াশার কারণে টিকে থাকায় মুশকিল। বের হলেও নেই বেচাকেনা।
পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মো. মনোয়ারুল ইসলাম জানান, রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিশুরা ডায়রিয়া ও শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে আসছে। তাদের চিকিৎসা এবং সুরক্ষিত রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ রোগীকে মেঝেতে ভর্তি করতে হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় যে তাপমাত্রা বিরাজ করছে, তা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। জানুয়ারির শেষে একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তখন তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রিতে নেমে যেতে পারে।