ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের রুপার থালা ও সোনার চামচে খাবার পরিবেশন করা হবে। বিশ্বনেতাদের আতিথেয়তায় কমতি রাখতে চাইছে না নরেন্দ্র মোদির সরকার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, বিশ্বনেতাদের জন্য পাঁচ তারকা হোটেল বরাদ্দ থেকে শুরু করে নানান বাছবিচার করে খাদ্যতালিকা করা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি চমক এনেছে খাবার টেবিলের থালাবাসন। রুপার থালা ও সোনার চামচে খাবার খাবেন বিশ্বনেতারা। এর মাধ্যমে সোনালি যুগের সেই রাজা-বাদশাহদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরবে ভারত। ‘আইরিস জয়পুর’ নামে একটি কোম্পানি এই বিশেষ পাত্রগুলো তৈরি করছে। সম্মেলন উপলক্ষে ২০০ জন কারিগর প্রায় ১৫ হাজার রুপার পাত্রে হস্তশিল্পের নিপুণ সূচিকর্ম দেখিয়েছেন। ক্রোকারিজ সেটগুলোতে ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের পাশাপাশি জাতীয় পাখি, ময়ূরের কারুকার্য অন্তর্ভুক্ত করা
হয়েছে। এ নকশাগুলো প্রায়ই অতিথিদের আকর্ষণ করে। মূল্যবান এ তেজসপত্র বিলাসবহুল হোটেল তাজসহ আরও ১১টি হোটেলে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে দেয়া সাক্ষাৎকারে আইরিস জয়পুর ক্রোকারিজ কোম্পানির মালিক রাজীব এবং তার ছেলে বলেছেন, তারা তিন প্রজন্ম ধরে এই পাত্রগুলো তৈরি করে আসছেন। তাদের লক্ষ্য বিদেশি দর্শকদের খাবার টেবিলে ভারতের স্বাদ দেয়া। এই পাত্রগুলো জয়পুর, উদয়পুর, বারানসি এবং এমনকি কর্নাটকের জটিল শৈল্পিকতা বহন করে। তারা বলেন, এ পাত্রগুলো তৈরি করতে প্রায় ২০০ কারিগরের ৫০ হাজার কর্মঘন্টা সময় লেগেছে। এতে জয়পুর, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, কর্নাটক এবং ভারতের অন্যান্য অংশের কারিগররাও কাজ করেছেন। সূক্ষ্ম কারুকাজ, পুঁতি এবং হস্তশিল্পের নিখুঁত দক্ষতায় তৈজসপত্রে নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ইলেকট্রোলেটেড সিলভার প্রলেপটি আরও পরিশীলতার ছোঁয়া যোগ করেছে। এগুলো অনুষ্ঠানের জাকঁজমকতাতে আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। কারুকাজ করার পরে প্রতিটি পাত্র আর অ্যান্ড ডি ল্যাবে পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যায়। বাসনগুলোর নকশা প্রতিটি হোটেলের নির্দিষ্ট মেন্যুর সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ‘মহারাজা থালি’। এর মধ্যে লবণ ও গোলমরিচ রাখার জন্য আলাদা রুপার পাত্র এবং ৫-৬ বাটি রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যখন ভারত সফরে গিয়েছিলেন, তখন তাকে এ কোম্পানির পাত্রেই খাবার পরিবেশন করা হয়। ওবামা সেগুলো দেখে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন, তিনি এই পাত্রগুলোর কিছু তার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।