রাজধানীর তুরাগের বাউনিয়া মৌজার বাউনিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকার রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যাক্তির মোট ৬ একর ৬৮ শতাংশ জমি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জবর দখল করে মার্কেট তৈরী করা সহ জমি ভড়াট করার অভিযোগ উঠেছে এলাকার মাতাব্বর হিসেবে পরিচিত খোরশেদ আলম ও তার দুই ভাই সাঈদ এবং জজ মিয়ার বিরুদ্ধে।
ভোক্তভোগি জমিটির মুল মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই জমিটি তার পৈত্রিক সুত্রে মালিক। মোট ৬.৬৮ একর জমিটি ১৯২০ সালে রফিকুল ইসলামের দাদা এই ক্রয় করেন। যার সিএস, এসএ খতিয়ানে মালিক হন মোঃ রফিকুল ইসলাম গংদের পূর্ব পুরুষ। জমিটি ফিরে পেতে আদালতের শরনাপন্ন হয়ে মামলা করে মামলার রায় পেয়েও জমিতে যেতে পারছি না।
আর এস খতিয়ানে উক্ত জমিটি জনৈক মোঃ সাইফুদ্দিনের নামে খতিয়ান লিপিবদ্ধ হলে ১৯৭৭ সালে বর্তমান বাদী রফিকুল ইসলামের চাচা মোঃ শামসুদ্দিন বাদী হয়ে জনৈক মোঃ সাইফুদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি দেওয়ানী মোকাদ্দমা দায়ের করেন, যার নাম্বার মামলা নং ৩২২/৭৭। জজ কোর্ট, হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে বাদী জনাব মোঃ শামসুদ্দিন নিজেদের পক্ষে রায় পান। সুপ্রিম কোর্টে মামলা নিষ্পত্তি হয় ১৯৯২ সালে।
মামলা চলাকালীন সময়ে মোঃ খোরশেদ আলম বিবাদী এবং মামলায় পরাজিত মোঃ সাইফুদ্দিনের কাছ থেকে ১৯৮৪ সালে জমিটি ক্রয় করেন বলে দাবী করেন।
১৯৯২ সালে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট মোঃ সাইফুদ্দিনের বিপক্ষে রায় দিলে খোরশেদ আলম জমিটি জোরপূর্বক তার দখলে রাখে,বাদীরা রায়ের পর খোরশেদ আলমের কারনে জমিতে ঢুকতে পারেন না। ৬.৬৮ একর জমি ১৯২০ সালে সিএস মালিকদের নিকট হতে রফিকুল ইসলাম সাহেবের তিন দাদা বয়নামা দলিল মুলে মালিক হন এবং এস এ খতিয়ানও তাহাদের নামে করে তিন ভাই আরএস জরিপের পূর্বেই পরপর তিন ভাই মারা জান আর এস খতিয়ান হলে উক্ত তিন ভাইদের ওয়ারিশ গনদের নামে এবং জনাব সাইফুদ্দিন নামের জৈনক ব্যাক্তির নামে প্রকাশ হয়। পরবর্তীতে উক্ত জমি লইয়া ১৯৭৭ সালে মুনসেফ আদালত থেকে শুরু করে সুপ্রিমকোর্ট সহ সব কোর্টেই খোরশেদ মাতাব্বর হেরে জান উক্ত জমি সিটি জরিপ সংশোধনে জন্য দোওয়া আছে কিন্তু খোরশেদ মাতাব্বর জমিতে জবরদখল করে রেখেছেন এখনো।
তিনি আরো বলেন, এই জমিতে খোরশেদ আলম এবং তার দুই ভাই আমার নামে জবর দখলের একটি মামলা করেন সে মামলাটি ২০১৭ সালে হাই কোর্ট মামলাটি শেষ করে দেন। তাদেও কোন বৈধতা নাই তবুও তারা আমাদের জমিটি এখনো দখলে রেখে আমার জমির উপর মার্কেট নির্মান করে বসে আছে এবং জমিতে মাটি ভড়াটের কাজ করছেন।
এছাড়াও খোরশেদ মাতাব্বরের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ হলো বাউনিয়া আব্দুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন সময় খোরশেদ মাতাব্বর প্রতিষ্ঠাতা দাতা সদস্য দাবি করেন ৬০ শতাংশ জমি দিয়ে যা ৪২ বছরেও জমির কাগজপত্র বুঝিয়ে দেননি। উল্টো ১ অযুতাংশ জমি স্কুলের নামে দান দেখিয়ে দুই ছেলে এক মেয়ে এবং স্ত্রীকে উক্ত বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য বানিয়ে দেন । বিদ্যালয়ের জমির মুল দানকারী হলেন আকবর আলি নামের এক ব্যাক্তি কিন্তু তাকে বাদ দিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিজেই হয়ে যান প্রতিষ্ঠাতা দাতা সদস্য। বর্তমানে দাতা সদস্য নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে দন্ধও চলছে।
এবিষয়ে খোরশেদ আলম বলেন, আমি চৌধুরি সাইফুদ্দিনের নিকট হতে সাড়ে ১৩ বিঘা জমি ক্রয় করেছি। এখানে আমার বাবারও সম্পত্তিও আছে। আমার জমিতে আমি মার্কেট করবো মাটি ভরাটের কাজ করবো এখানে রফিকুল ইসলামের কোন সম্পত্তি নাই সে বললেই হলো এটা তার জমি। এই জমি নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। আপনার ভয়ে নাকি জমির প্রকৃত মালিক রফিকুল ইসলাম তার নিজ জমিতে আসতে পারে না আপনি নাকি লোকজন নিয়ে ভয়ভৃতি দেখান এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন আমি সিংহ নাকি যে আমাকে ভয় পায় তারা। স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা দাতা সদস্য কিভাবে হলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ৬০ শতাংশ জমি স্কুলের নামে দিয়েছি প্রতিষ্ঠাকালিন সমযে তাই আমি প্রতিষ্ঠাতা দাতা সদস্য। দানকৃত সম্পত্তি কাগজপত্র ৪২ বছরেও বুঝিয়ে দিতে পারেন নাই কেন এমন প্রশ্নের উত্তররে নিতে বলেন আমি সব কিছু বুঝিয়ে দিয়েছি যদি তারা কাগজপত্র বুঝে না পায় তাহলে আমার নামে মামলা করে দিক এবং স্কুলের নিবন্ধন বাতিল করে দিক। ভুয়া কাগজপত্র সৃজন করে আপনার তিন সন্তান এবং স্ত্রীকে স্কুলের দাতা সদস্য করেছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি এমন কোন কিছুই করি নাই। আমাদের সকলের দান করা সকল কাগজপত্রই স্কুলকে বুঝিয়ে দিয়েছি।