রাজধানীর তুরাগের বাউনিয়ায় এলাকায় বিএনপির প্রতিবাদ সভায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিত থাকতে দেখে গেছে। উক্ত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিধি হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হাজী মোস্তফা জামান। উক্ত প্রতিবাদ সভার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে বেশ তোলপাড় হতে দেখা গেছে।
এছাড়াও উক্ত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ খোকা, হাজী জহির, আজাহারুল ইসলাম আজা সহ কয়েকজন পদধারি বিএনপি নেতা। মঞ্চে বিএনপি নেতাদের মধ্যে অন্যরা যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন তার একাদিক প্রমান পাওয়া গেছে।
মঞ্চে এবং দর্শক সারিতে থাকা প্রায় দুই-তিনশত লোকের মধ্যে অনেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন এমন অনেকেই সভায় উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। গতকালের এ সভাটি নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের এবং আওয়ামিলীগের নেতাকর্মীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনা করতে দেখা গেছে এবং রাজনীতি করেন এমন অনেককেই কমেন্ট করতে দেখা গেছে। অনেকই এবিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি গুলোতে দেখা যায়, যেসব লোকজন গতকালের মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন তাদের অধিকাংশই দুই মাস আগেও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে পদ পদবী নিয়ে সাবেক এমপি হাবিব হাসান এবং খসরু চৌধুরীর পক্ষে মিটিং মিছিলে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসুচিতে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে। গত ৫ইং আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তারা এখন বিএনপি নেতার প্রতিবাদ সভার মঞ্চে প্রধান অতিথির পিছনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি একজন পদধারি নেতা প্রতিবেদককে বলেন, গতকাল হাজী মোস্তফা জামান যে প্রতিবাদ সভাটি করেছেন সেখানে উপস্থিত অনেকেই দুই মাস আগেও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। তারা এখন ভোল পাল্টিয়ে বিএনপির প্রতিবাদ সভার মিটিংয়ে অংশ নিতে দেখা গেছে।
তুরাগের স্থানীয় এ নেতা আরো বলেন, রাজধানী তুরাগের বাউনিয়া এলাকাটি ফ্যাসিবাদ সরকারের সাবেক এমপি হাবিব হাসানের নিজ গ্রাম এবং তার নানাবাড়ী এলাকা হওয়ায় সেখানে বিএনপির তেমন কোন কার্যক্রম গত ১৫ বছরে হয়নি। সামান্য কিছু এলাকার বাসিন্দা যারা বিএনপি মনা ছিলেন তারাও আওয়ামী লীগের সাথে মিলে মিশে একাকার ছিলেন। কিন্তু গতকালের মিটিংয়ের পর দেখা গেছে সম্পূর্ন বিপরিত চিত্র।
প্রতিবাদ সভার মঞ্চের মুল ডাইসে বসা ছিলেন আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন পদধারি নেতা এবং কর্মী। তাদের অন্যতম হচ্ছে বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের তুরাগ থানা সাধারণ সম্পাদক আশরাফ খান, যুবলীগ কর্মী সোহেল রানা, আওয়ামী লীগ নেতা এবং সাবেক এমপি খুসরু চৌধুরীর নির্বাচনী সমন্বয়ক সানাউল্লাহ, সাবেক এমপি হাবিব হাসানের ভাগনি জামাই ইসহাক মিয়া , তুরাগ থানা কৃষক লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম মাদবর, আওয়ামী লীগের নেতা হাজী আব্দুল্লাহ সহ ১২ নং ওয়ার্ড কৃষকলীগের সভাপতি সেলিম মিয়া এবং আওয়ামী লীগ নেতা লাবু মিয়া এবং আতাউর রহমান আতা। তারা সবাই হাবিব হাসানের আত্মীয় এবং শুভাকাংঙ্খি ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সর্বোচ্চ সুবিধাবাদী এ লোকজন রাতারাতি ভোল পাল্টিয়ে বিএনপির কর্মী বনে গেছেন। গতকাল প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠানের পর কৃষক লীগ নেতা সেলিম মিয়ার বিএনপির অফিস উদ্বোধন করেন স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতাকর্মী।
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক যুগ্ন-আহ্বায়ক হাজী মোস্তফা জামানকে ফোন করলে তিনি কোন কথা না বলে ফোন কেটে দেন। তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।