বাইক নিয়ে বিদেশ ভ্রমনের ইচ্ছে অনেকেই আছে। আর সে ইচ্ছা থেকে এবার বাংলাদেশের তিন বাইক রাইডার বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সড়ক নেপালের মানাং সিটি ও মুস্তাং প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার রাইড করে তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন উত্তরা তুরাগের দলিপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা মো. সোলাইমান দাড়িয়া, চাঁদপুর জেলার শাহ আমানত দিপ ও গাজীপুরের মার্ক সবুজ।
গত ২১ অক্টোবর বাংলাদেশ থেকে বিমান জোগে নেপালে যান তারা, সেখান থেকে রাইক রেন্ট এ নিয়ে বিশ্বের ভয়ঙ্কর দুটি সড়কে মোট ১৬০০ পদ রাইড করেন তারা। ১ নভেম্বর তাদের এই রাইড সমাপ্তি করে।
দলিপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা সোলাইমান দাড়িয়া প্রতিবেদককে জানান, নেপাল মুস্তাং যাওয়াটা অনেক কঠিন ছিল। আপনার হিল রাইড আর অফরোড রাইডিং এর একটা ভালো অভিজ্ঞতা না থাকলে আপনি সেখানে না যাওয়ায় উত্তম। নাহলে হুট করে গিয়ে আপনি ঐ রোডে সারভাইভ করতে পারবেন না। আমাদের দেশের অনেক বাইকার আছে কম-বেশি। অনেকে ইতিমধ্যেই বিশাল মাপের ভ্রমন করেছে দেশের বাইরে। নেপাল মুস্তাং ভ্যালী রাইড অন অফ দ্যা মোস্ট এডভেঞ্চারিয়াস এন্ড ডেঞ্জারাস রোড ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড । এখানে প্রতিটা মুহূর্তই চ্যালেঞ্জিং ছিল। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে অনেক জায়গায় আমি ট্যুর করেছি। মনে মনে চিন্তা করলাম তিন মাস আগ থেকে নেপালে আমরা একটা ট্যুর করবো। এই ট্যুর করতে আমাদের প্রত্যেকের দুই লাখ টাকা করে খরচ হয়েছে।
শাহ আমানত দিপ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা মানাং ট্যুর শেষ করতে পারবো এটা কখনো ভাবিনি। ভয়ংকর রকমের অফরোড ছিল। আমি ভয়ংকর রকমের এক অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলাম।
আমি পেশায় একজন ব্যবসায়ী, চাঁদপুর এর ছেলে আমি, এটা আমার দ্বিতীয় ইন্টারন্যাশনাল বাইক ট্যুর, নেপালে বাইকে আমরা মুসতাং এবং মানাং বাইকে ট্যুর করি, নেপাল খুবই সুন্দর একটি দেশ এবং নেপালের মানুষ খুবই ভালো, বাংলাদেশের মানুষকে তারা সম্মান করে। আমার কাছে তাদের আন্তরিকতা খুব ভালো লেগেছে। কিন্তু মানাং এর অফরোডিং হলো আমাদের এশিয়ার মধ্যে ভয়ংকর একটি রাস্তা, সে রাস্তা জয় করে আসছি আমরা তার জন্য আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করি।
গাজীপুরের ছেলে মার্ক সবুজ প্রতিবেদককে বলেন, আমি বাইকার ও বাইক দিয়ে দুনিয়া ঘুরে দেখা আমার নেশা। নেপালের মুস্তাং মুক্তিনাথ টাফেস্ট মানাং এক্সপ্লোর করার শখ ছিলো বহু আগে থেকেই। ব্যাটে বলে মিলে যাওয়ায় এবার আমি ইয়ামাহা এফজিভি-২ দিয়ে নেপালের বিরুপ জায়গাগুলো এক্সপ্লোর করতে সক্ষম হয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ। ভিন্ন পরিবেশে ভিন্ন অবস্থানে সারভাইভ করাটা আমি উপভোগ করি। সবকিছু মিলিয়ে আমার এই ট্রিপটা বিন্দাস ছিল।
বিশ্বের ভয়ঙ্কর দুটি সড়ক ভ্রমণ করায় তাদের বন্ধু-বান্ধব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দন ও বিভিন্ন পরামর্শ দেন। কেউ কেউ লিখেন মানাং ভ্যালীতে স্বাগতম, সাজেক ভ্যালির পাশেই উদ্ভোদন হয়ে গেলো এই মানাং ভ্যালি। যেই বয়সে এমন রাস্তায় এডভেঞ্চার করার কথা বেশিরভাগ ছেলেদের সেই বয়সে লুংগী সামলাইতে আর বসের ঝাড়ি খেতে খেতে জীবন যায়। আর এদিকে এমআরকে সবুজ (Mrk Sabuz) সোলাইমান দাড়িয়া (Solyman Daria) এর মত মাঝ বয়সের লোকজন টাকা পয়সা জমিয়ে এমন এডভেঞ্চার করে। তবে শাহ আমানত দিপ (Shah Amanat Dipu) খুবই সৌভাগ্যবান অনেক কম বয়সে অনেক ভালো একটা এডভেঞ্চার করে ফেললো। মানাং এশিয়ার অন্যতম টাফ অফরোড গুলোর মধ্যে একটা, অভিনন্দন আপনাদের ভাইয়েরা, স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারলেও মনে মনে আপনাদের সাথেই আছি।