রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় বিএনপি নেতা জাহিদ(৩৫) এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের নামে চাঁদাবাজি, বাড়ি ভাঙচুর ও ছিনতাই এর অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন দক্ষিণখান বাঁশি।
চাদাঁবাজী করতে এসে বিএনপি নেতা জাহিদ পালিয়ে গেলেও তার একজন সহকর্মী রবিউল ইসলাম (১৯) কে আটক করছে স্থানীয় জনতা। পরে তাকে দক্ষিণখান থানায় সোপর্দ করেন এলাকাবাসী। ভুক্তভোগী নাজিম উদ্দীন দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাজিম উদ্দিন (৪৬) একজন শান্ত প্রকৃতির সাধারণ ঠিকাদার। তিনি দাবি করেন, বিবাদী ১। মোঃ রবিউল ইসলাম (১৯), ২। মোঃ ইমদাদুল হক সোহান (৩০), ৩। জাহিদ (৩৫), ৪। জহির রায়হান (৩৫), ৫। আশরাফ (২৫), ৬। কাঞ্চন (২০), ৭। সোহান (২৪), ৮। রুহুল (২০), ৯। সোহাগ (২৬), ১০। বিপ্লব (২০), ১১। টিপুসহ((২৫), অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১২ জন বিবাদীগণ খুবই খারাপ ও উশৃঙ্খল প্রকৃতির লোক। আমি দক্ষিণখান থানা এলাকায় চালাবন রোডে নির্মাণ কাজের সাব ঠিকাদার হিসেবে নিয়োজিত আছি। দীঘ ০৮ মাস যাবত কাজ করে আসতেছি।
বিবাদী জাহিদ এর প্ররোচনায় ও নির্দেশে বিগত কিছুদিন যাবত উল্লেখিত অন্যান্য বিবাদীগণ আমার নিকট ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবী করে আসতেছে। আমি বিবাদীগণের চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিবাদীগণ আমাকে রাস্তার নির্মাণ কাজ করিতে দিবে না মর্মে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করিয়া আসতেছে। বিবাদীগণের দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ার জের হিসেবে গত ইং ২৬/১২/২০২৪ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৭.০০ ঘটিকার সময় উপরোক্ত বিবাদীগণসহ আরও অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন বেআইনী জনতাবন্ধ হয়ে চাপাতি, ছোরা, লোহার রড, এসএস পাইপ, সেলাই রেন্স, লাঠি-সোঠা ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হইয়া দক্ষিণখান থানাধীন চালাবন বিদ্যুৎ অফিস সংলগ্ন আমার বর্ণিত ভাড়া বাসায় অনধিকার প্রবেশ করিয়া পুনরায় আমার নিকট ১০,০০,০০০/= , (দশ লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবী করে। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করিলে উল্লেখিত বিবাদীগণসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীগণ আমার উপর ক্ষিপ্ত হইয়া অতর্কিত আক্রমন করে। ঐ সময় আমার সহকর্মী মোঃ সুমন (৩২), ইউসুফ (২৭) এবং মোঃ সোহাগ (১৮) গণ আমাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এলে বিবাদীগণ তাদের হাতে থাকা লোহার রড ও এসএস পাইপ দিয়া এলোপাথারী ভাবে আমার সহকর্মীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিট করে নীলাফুলা জখম করে। ১নং বিবাদীর হাতে থাকা চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার সহকর্মী সুমনকে লক্ষ্য করিয়া কোপ মারিলে সুমন পিছনে সরে গেলে উক্ত কোপ লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে মাটিতে লাগে।
বিবাদীগণ আমার রুমের তোষকের নিচে লেবারদের খোরাকী বিল বাবদ রাখা নগদ ৩,২৫,০০০/- (তিন লক্ষ পচিশ হাজার) টাকা নিয়ে যায়। আমার ভাগিনা মোঃ রাশেদ মুন্সী (১৯) আমাদের রক্ষা করার জন্য আসলে অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা তাকে এলোপাথারী মারপিট করিয়া তার হাতে থাকা ০১টি Vivo মোবাইল ফোন, মূল্য অনুমান ২২,০০০/-(বাইশ হাজার) টাকা নিয়ে যায়। আমাদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন আমাদেরকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এলে বিবাদীগণ তাহাদের দাবীকৃত ১০,০০,০০০/= (দশ লক্ষ) টাকা চাঁদা না দিলে এবং ঘটনার বিষয়ে কাউকে জানাইলে আমাদেরকে সুযোগ মত পাইলে মারপিট করিয়া খুন করবে বলে হুমকি প্রদান করে চলে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ১নং বিবাদী মোঃ রবিউল ইসলাম (১৯) কে আটক করে উত্তেজিত হইয়া উত্তম-মধ্যম দেয়। পরবর্তীতে দক্ষিণখান থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হইয়া বিবাদী মোঃ রবিউল ইসলাম (১৯)কে হেফাজতে নেন।
আমার সহকর্মীদের অবস্থা খারাপ হওয়ায় আশপাশের লোকজনের সহায়তায় আমি তাদেরকে প্রথমে নিকটস্থ আর্ক প্রাইভেট হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল (আজমপুর) উত্তরা, ঢাকা গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি।
উল্লেখ্য জাহিদ একজন খারাপ প্রকৃতির লোক। ইতিপূর্বে ও তার নামে বিভিন্ন মামলা ছিল। বিগত সরকারের পতনের পর আবারও মাথা চারা দিয়ে উঠে বিএনপি নেতা জাহিদ। ভুক্তভোগী নাজিম উদ্দিন জাহিদ ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিচারের দাবি করেন।