1. shahinit.mail@gmail.com : dhaka24 : ঢাকা টোয়েন্টিফোর
  2. arifturag@gmail.com : ঢাকা টোয়েন্টিফোর : ঢাকা টোয়েন্টিফোর
রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৪ অপরাহ্ন

‘বিভ্রান্ত না হয়ে’ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন, জনগণকে তারেক রহমান

Dhaka24 | ঢাকা টোয়েন্টিফোর -
  • প্রকাশ | বুধবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৫২ পাঠক

‘বিভ্রান্ত না হয়ে’ জনগনকে নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারেক রহমান। বুধবার বিকালে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘‘বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত স্বচ্ছ জনগন কোন রাজনৈতিক দলকে গ্রহন করবে কিংবা বর্জন করবে নির্বাচনের মাধ্যমে সেই রায় দেবে জনগনের আদালত। তবে যারা জনগনের আদালতের রায়ের মুখোমুখি হতে ভয় পায় কিংবা যাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে তারাই নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে নানারকম বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।”

‘‘গণতন্ত্রকামী জনগনের প্রতি আহ্বান, আপনারা ধর্য্য হারাবেন না, নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে থাকুন। নির্বাচন কমিশন তাদের অর্পিত দায়িত্ব যথারীতি পালন করবে সেই বিশ্বাস রাখুন।”

দলের নেতা-কর্মৗদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, ‘‘আপনারা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। বরং সর্তক থাকবেন। নিজেরা এমন কোনো কাজে সম্পৃক্ত হবেন না যাতে কেউ অপপ্রচারের সুযোগ পায়। নিজেদেরকে জনগনের আস্থায় রাখুন। জনগনের আস্থায় রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। ”

‘কোনো হঠাকারী সিদ্ধান্ত নয়’

তারেক রহমান বলেন, ‘‘আমাদের সকলকে খেয়াল রাখতে হবে, কোনো হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে যাতে গণঅভ্যুত্থানের আকাংখা বিনষ্ট হবার পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়। এব্যাপারে ছাত্র দলের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে সর্তক ও সজাগ থাকতে হবে।”

‘‘মনে রাখা দরকার লোক বা লাভের উধর্বে উঠে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ এবং স্বাবলম্বী বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ করে ছাত্র-তরুনদের ভূমিকা অপরিসীম।”

‘সংস্কার কর্মসূচি প্রসঙ্গে’

তারেক রহমান বলেন, ‘‘কোনো কোনো মহল থেকে সংস্কার নাকি নির্বাচন এই ধরনের জিজ্ঞাসাকে বিএনপি তথা দেশপ্রেমিক সকল মানুষ, সকল রাজনৈতিক দল শ্রেফ অসৎ উদ্দেশ্য প্রনোদিত কুট তর্ক বলেই বিবেচনা করে। বরং আমাদের দল বিএনপি মনে করে রাষ্ট্র, রাজনীতি এবং রাজনৈতিক দলের গুনগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার এবং নির্বাচন উভয়ই প্রয়োজন। বিদ্যমান ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী করতে সংস্কার একটি অনিবার্য্ ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। একই ভাবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে টেকসই এবং প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দিতে নির্বাচনই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্য্কর পন্থা। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের ভোটের অধিকার প্রয়োগের যে সুযোগটি পায় যেটি রাষ্ট্র-জনগনের রাজনীতির ক্ষমতা নিশ্চিত করে।”

‘‘বিএনপি মনে করে রাষ্ট্রে জনগনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা না গেলে গণতন্ত্র, মানবাধিকার কিংবা পূঁথিগত সংস্কার শেষ পর্যন্ত কোনো কিছুই টেকসই হয় না। অন্তবর্তীকালীন সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে… সংস্কার কার্য্ক্রম অবশ্যই প্রয়োজন। এই কারণে অন্তবর্তীকালীন সরকার হয়ত তাদের দৃষ্টিতে অনেক বড় বড় সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তবে এই সব কর্মসূচির আড়ালে জনগনের নিত্য দুদিনের দুদর্শা উপেক্ষিত থাকলে জনগন হয়ত ক্ষোভ সরকারের সংস্কার দাবি নিয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হবে।

তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে জনগনের মনে প্রশ্ন উঠেছে পলাতম স্বৈরাচারের আমলে সৃষ্ট বাজার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দ্রব্যমূল্য জনগনের ক্রয়ক্ষমতার ভেতর আনতে সরকার কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে।ফ্যাসিস্ট আমলে দায়ের করা লক্ষ লক্ষ মামলায় এখনো কেনো প্রতিদিন মানুষকে আদালতের বারান্দায় ছুটোছুটি করতে হচ্ছে।”

‘‘দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিএনপি বার বার যেকথাটির ওপরে জোর দিতে চায় সেটি হলো অন্তর্বতীকালীন সরকার তাদের সংস্কার কিংবা গৃহীত পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার নির্ধারণে ব্যর্থতার পরিচয় দিতে চাইলে ষড়যন্ত্রকারীর ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট বিনষ্ট করার সুযোগ নেবে। এরই মধ্যে তারা একাধিকার বার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টা চালিয়েছে। হাজারো ছাত্র জনতার রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা দেশে গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি দেখতে চায় না। এই কারণে জনগনের পক্ষের রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এই সরকারের প্রতি অব্যাহত রেখেছে।”

‘গণতান্ত্রিক উদ্যোগকে বিএনপি স্বাগত জানায়’

তারেক রহমান বলেন, ‘‘রাষ্ট্র, রাজনীতি, সরকার প্রচলিত বিধি ব্যবস্থা সংস্কার করে আরও উন্নত বিধি ব্যবস্থার পক্ষে ছাত্র-তরুনরা অবস্থান নেবে সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে… দেশের তরুন জনশক্তি ভুমিকা রাখতে এটাই স্বাভাবিক এটাই তারুণ্যে ধর্ম।”

‘‘দেশে প্রয়োজনে আরও নতুন নতুন রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটবে এটাই গণতান্ত্রিক রীতি… এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রয়োজনে বিএনপি সকল গণতান্ত্রিক উদ্যোগকে স্বাগত জানায়।বিএনপি তার জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত সকল পরিস্থিতিতে সকল সময়ে বহু দল ও মতের চর্চার পক্ষে।”

রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্র দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই আলোচনা সভা হয়। মিলনায়তন ছাড়াও ইন্সটিটিউশনের বাইরেও প্যান্ডেল টানানো হয় এবং বড় পর্দার স্ক্রীন স্থাপন করা হয়।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করেন।

ছাত্র দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে সংগঠনের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

‘ছাত্রদলকে লেখাপড়া করতে হবে’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে ছাত্র দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, ‘‘তোমাদেরকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে প্রধান হাতিয়ার। রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। তবে শিক্ষার্থী হিসেবে তোমাদের প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য হতে হবে লেখাপড়া, লেখাপড়া এবং লেখাপড়া।”

‘‘লেখাপড়ার পাশাপাশি তোমরা নিজেদেরকে জনকল্যাণমূলক কার্য্ক্রমের সাথে সস্পৃক্ত রাখো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজেকে একজন আদর্শ শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হও।শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবক আামাদের প্রত্যেকের মনে রাখা জরুরী আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীর বাংলাদেশ। সুতরাং শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষা-দীক্ষায়, জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করা না গেলে নিশ্চিতভাবে হয়ত আবারো পথ হারাবে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।”

‘আবারও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘আজকের যে অবস্থা, যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে… এই সংকট একমাত্র সমাধান হতে পারে একটা সফল নির্বাচনের মাধ্যমে এটা ইতিহাসেও প্রমাণিত। আমরা সেই কথা বার বার বলে আসছি।”

‘‘আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে সেই চক্রান্তের ধারা শুরু হয়েছে। যেটা অতীতে হয়েছে বহুবার, যার ফলে আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হারিয়েছি, যারই ফলে আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ৬ বছর কারাগারে থাকতে হয়েছে, যার ফলে আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবকে বিদেশে থাকতে হচ্ছে। এই চক্রান্ত আবার শুরু হয়েছে কি করে বাংলাদেশের সত্যিকারভাবে যারা বাংলাদেশে বিশ্বাসী, যারা জোর গলায় বলতে পারে সবার আগে বাংলাদেশ সেই দলকে সেই দলের নেতাকে আজকে তারা দূরে সরিয়ে রাখতে চায়।”

‘‘আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান জানাতে চাই, অতিদ্রুত একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশের মানুষকে এই সংকট থেকে মুক্ত করতে হবে, বাংলাদেশের মানুষকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের জ্ঞানভিত্তিক রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোরালোভাবে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ছাত্র দলের সাবেক নেতৃবৃন্দের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, আমান উল্লাহ আমান, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, রাকিবুল ইসলাম বকুল, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, রাশেদ ইকবাল খান, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ঢাকা বিশ্ববিদ্য্যালয় ছাত্র দলের গণেশ চন্দ্র রায় সাহস প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

লাইক কমেন্ড ও শেয়ার করে সাথে থাকুন-

আরো খবর

© All rights reserved | 2016 dhaka24.net by |

Theme Customized BY WooHostBD