মোবাইল-ইন্টারনেট সেবায় ভ্যাট না কমালে আগামী সপ্তাহে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন ইন্টারনেট খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। সেখানে ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত বর্ধিত করহার প্রত্যাহার চেয়ে বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বলেন, পাচারের অর্থ ফিরিয়ে আনার পরিবর্তে জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ‘কর বৃদ্ধির ফলে এখন থেকে এক হাজার টাকার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ১৫৫ টাকার বেশি দিতে হবে গ্রাহককে।
আমাদের ছোট ছোট উদ্যোক্তা যেমনভাবে হুমকির মুখে পড়বেন, ঠিক একইভাবে গ্রাহকদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝার চাপ বাড়বে। ফোনে ইন্টারনেট সেবা বিমুখ হবে জনগণ, যা নতুন করে বৈষম্য তৈরি করবে।’
বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ন্যান্স ফোরাম ও আইআইজির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ‘শতভাগ দেশি উদ্যোক্তার মাধ্যমে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হয়। এই সেবা খাত ধ্বংস করার অপচেষ্টা আগেও করা হয়েছে।
এখন আবার নতুন করে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক (এসডি) এবং সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত করায় গ্রাহকের ভোগান্তি যেমন বাড়বে, তেমনি এই সেবা খাত ধ্বংস হয়ে যাবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে যদি এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা হয় তাহলে আমরা গ্রাহক এবং সেবা খাতের সবাইকে নিয়ে এনবিআর কার্যালয় ঘেরাও করব।’
মানববন্ধনে প্রযুক্তিবিদ, প্রযুক্তি শিল্প উদ্যোক্তা ও বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, কারো সঙ্গে আলোচনা না করে নতুন করে ইন্টারনেট সেবায় কর আরোপ এক ধরনের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ। নতুন করে কর বাড়ালে টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা খাত হুমকির মুখে পড়বে।
সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ রাজস্ব কর্মকর্তাদের খুশি করতেই তাঁদের পরামর্শে এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আমরা ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পর আর রাজপথে দাঁড়াতে হবে না। কিন্তু আজ দুঃখের সঙ্গে আমাদের রাজপথে দাঁড়াতে হলো।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন প্রযুক্তিবিদ ফিদা হক, ফ্রিল্যান্সারদের প্রতিনিধি আনিস, রিচার্জ ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন ও পাঠাওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ প্রমুখ।
গত বৃহস্পতিবার শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। নতুন করহার এরই মধ্যে কার্যকর হয়েছে।