বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদকে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এক প্রজ্ঞাপনে তার পরিচালক পদ বাতিলের কথা জানানো হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সভাপতির পদে থাকছেন না তিনি।
এর মাধ্যমে বিসিবির শীর্ষ পদটি এখন শূন্য। কে হবেন নতুন সভাপতি—এ নিয়ে চলমান আলোচনায় সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে আরেক সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নাম।
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও পরবর্তীতে সরকারের পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে ক্রিকেট বোর্ডেও। ওই সময় নতুন প্রশাসনের অধীনে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পান ফারুক আহমেদ। তবে মাত্র এক বছরের মাথায় তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
সম্প্রতি বিসিবির আটজন পরিচালক যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে একটি চিঠি পাঠান, যেখানে ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করা হয়। চিঠির তারিখ ছিল (২৮ মে), তবে স্বাক্ষরকারীদের কয়েকজন জানিয়েছেন, তারা চিঠির বিষয়ে অবহিত হন (২৯ মে) সকালে এবং সেদিনই সই করেন। অভিযোগ উঠেছে, অনেকের স্বাক্ষর স্ক্যান করে যুক্ত করা হয়েছে।
চিঠিতে ফারুকের বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে একাধিক গুরুতর অভিযোগ— স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, একক সিদ্ধান্তে বোর্ড পরিচালনা, কাউকে না জানিয়ে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে অপসারণ, বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব এবং তালিকাভুক্ত ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে দায়িত্ব না দেওয়া।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারী আট পরিচালক হলেন: নাজমূল আবেদীন, ফাহিম সিনহা, সাইফুল আলম স্বপন, ইফতেখার রহমান, মাহবুবুল আনাম, কাজী ইনাম আহমেদ, মনজুর আলম ও সালাহউদ্দিন চৌধুরী। এদের অনেকেই আগের সরকারের সময়ে বোর্ড পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
তবে এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ফারুক আহমেদ। তার ভাষায়, ‘চিঠির কোনো ভিত্তি নেই। যারা দীর্ঘদিন অন্যায়ের সঙ্গে ছিল, তারাই এখন আমার বিরুদ্ধে কথা বলছে।’
এর আগে (২৮ মে) রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে এক বৈঠকে বসেন ফারুক। সেখানেই তাকে জানানো হয়, সরকার বিসিবির নেতৃত্বে আর তাকে দেখতে চায় না। তবে ফারুক জানিয়ে দেন, তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন না।
‘সরকার আমাকে কেন অপসারণ করতে চায়, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, আমাকে রাখা হবে না। বিনা কারণে তো পদত্যাগ করতে পারি না’— বলেন ফারুক আহমেদ।
পরদিন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রজ্ঞাপনে তার পরিচালক মনোনয়ন বাতিল করা হয়। ফলে তিনি বিসিবির সভাপতির পদ থেকেও বিদায় নিতে বাধ্য হন।