August 3, 2025, 3:32 am

নওগাঁয় মাদুর বুনিয়ে পড়াশোনার খরচ যোগিয়ে জিপিএ-৫ পেলেন আশা

Reporter Name 170 View
Update : Thursday, May 9, 2019

ইউনুস আলী ফাহিম, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
আশার বাবা ছিলেন একজন রাজমিস্ত্রি চিকিৎসার অভাবে মারা যায় গত ১২ সালে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে আশা সবার ছোট। বাবা মারা যাওয়ার পর বড় ভাইয়ের আয়ে কোন মতে চলে সংসার।
নিজের পড়াশোনার খরচ যোগানোর জন্য মাদুর তৈরি করতো আশা মুনি। নিজের চেষ্টা আর স্কুলের শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় আশা মুনির পড়ালেখায় ছিল বেশ। আশা মুনি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পার্শ্ববর্তি বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার শেষ সীমানা দড়িয়াপুর গ্রামের মৃত-আজাদ হোসেনের মেয়ে। সে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল একাডেমী থেকে কারিগরি (ভোকেশনাল) বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু বর্তমানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করা নিয়ে সে নিজে এবং তার গরীব-অসহায় পরিবার অনেকটাই অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।

আশা মুনি বলে আমি অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করেছি। আমার এই ফলাফলের পেছনে পরিবার ও স্কুল শিক্ষক এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের অসীম ভ’মিকা রয়েছে। আমার পরিবারের পক্ষে আগামীতে আমার পড়ালেখার খরচ যোগান করা অনেক কষ্ট সাধ্য। তাই জানি না আমি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবো কিনা। তবে আমার ইচ্ছে আমি দেশের সব পড়াশোনা শেষ করে দেশ ও গরীব-অসহায় মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। আমার পরিবার এখন আমাকে বিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আমি আরো পড়ালেখা করতে চাই।
আশা মুনির মা ফেরদৌস বেগম বলেন স্বামীর অকাল মৃত্যুর পর থেকে বড় ছেলের আয় আর আমার মাদুর তৈরি করে যে টাকা আয় হতো তা দিয়ে এক ছেলে আর এক মেয়ের পড়ালেখার খরচ যোগানো আমার জন্য খুবই কষ্টসাধ্য ছিলো। তবুও মেয়ের ইচ্ছে অনুসারে চেষ্টা করেছি তাকে এসএসসি পাশ করানোর জন্য। কিন্তু এখন মেয়ের পড়ালেখার জন্য খরচ যোগানো আমার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। তাই মেয়েকে একটি ভালো পরিবার দেখে বিয়ে দিয়ে মুক্ত হতে চাই। আর যদি কোন প্রতিষ্ঠান কিংবা সমাজের বিত্তবানরা সহযোগিতা করতো তাহলে হয়তো বা আমার মেয়ের স্বপ্ন পূরণ হতো।

সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল একাডেমীর অধ্যক্ষ ইকবাল মো: সাইদুর কবীর বলেন, আশা মুনি অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করেছে। তার বাবার মৃত্যুর পর আশার বড় ভাই পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে পরিবারের হাল ধরে। তবে ওদের পরিবারের আয়ের মূল উৎস ছিলো মাদুর তৈরি। তবে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি আশাকে সহযোগিতা করার। তবে কেউ আশার দায়িত্ব নিলে হয়তো বা তার পড়ালেখা চলমান থাকতো। তা না হলে হয়তো বা তার গরীব পরিবার তাকে বিয়ে দিয়ে দিবে।


More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর