সম্রাটের জন্য মেডিকেল টিম গঠন, সিসিইউতে ভর্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০১৯ :
বুকে ব্যথা নিয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইসিভিডি) ভর্তি হওয়া ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট এর জন্য তিন সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এই মেডিকেল টিমটির অধীনে সম্রাট পর্যবেক্ষণে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক আফজালুর রহমান।
তিনি বর্তমানে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট (এনআইসিভিডি) হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলেও জানান। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল ৮টায় তাকে হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মহসিন আহমেদের অধীনে ভর্তি করা হয়।
কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বুকে ব্যথা অনুভব করায় সোমবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে হৃদরোগ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক আফজালুর রহমান বলেন, সম্রাটের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সব রিপোর্ট এখনো হাতে আসেনি। তবে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শেরেবাংলা নগরে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে এক ব্রিফিংয়ে তিনি সম্রাটের শারীরিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরেন।
এনআইসিভিডি’র পরিচালক জানান, এটি কোনো আনুষ্ঠানিক মেডিকেল বোর্ড নয়। সংকটাপন্ন কোনো রোগী এলে জরুরিভিত্তিতে যে ইনফর্মাল মেডিকেল টিম চিকিৎসা দেয়, সেই মেডিকেল টিমের অধীনে রয়েছেন সম্রাট।
অধ্যাপক আফজালুর রহমান বলেন, বুকে ব্যথা নিয়ে সম্রাট এখানে ভর্তি হয়েছিলেন। তার মেডিকেল হিস্টোরি বিশ্লেষণ করে আমরা জেনেছি, প্রায় দুই দশক আগে তার হৃদযন্ত্রের একটি ভালভ প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। সেটি থেকেও ব্যথা হতে পারে। আমরা এখনো এ বিষয়ে নিশ্চিত নই।
এনআইসিভিডি পরিচালক আরও বলেন, সম্রাটের শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। সেগুলোর কয়েকটির রিপোর্ট আমরা হাতে পেয়েছি, কয়েকটির রিপোর্ট এখনো হাতে পাইনি। যে মেডিকেল টিমের অধীনে সম্রাট চিকিৎসাধীন, তারা তার রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করছেন। সবগুলো রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর আমরা বলতে পারব, তার শারীরিক অবস্থা কোন দিকে যাবে।
আফজালুর রহমান জানান, যে মেডিকেল টিমের অধীনে সম্রাট চিকিৎসাধীন, সব রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তারাই জানাবে, সম্রাটকে আপাতত সিসিইউতে রাখা হবে নাকি বেডে স্থানান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, রবিবার ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার সহযোগী আরমানকেও গ্রেফতার করে র্যাব। পরে তাদেরকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আলোচিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ঢাকার জুয়াড়িদের কাছে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত। জুয়া খেলাই তার পেশা ও নেশা। প্রতি মাসে ঢাকার বাইরেও যেতেন জুয়া খেলতে।
সম্প্রতি রাজধানীতে ক্লাব ব্যবসার আড়ালে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে র্যাবের হাতে ধরা পড়েন সম্রাটের ডান হাত হিসেবে পরিচিত যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া।
এর পর ধরা পড়েন রাজধানীর টেন্ডার কিং আরেক যুবলীগ নেতা জিকে শামীম। এ দুজনই অবৈধ আয়ের ভাগ দিতেন সম্রাটকে। তারা গ্রেফতার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাটের অবৈধ ক্যাসিনো সাম্রাজ্য নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। প্রকাশ্যে চলে আসে সুন্দর অবয়বের আড়ালে সম্রাটের কুৎসিত জগৎ। এতে করে বেকায়দায় পড়েন সম্রাট।