জি কে শামীমের ১২ প্রকল্পের কাজ বন্ধ!
						নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০১৯ :
সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে টেন্ডার বাণিজ্য এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছেন সাবেক যুবলীগ নেতা এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম। আলোচিত এই ‘টেন্ডার কিং’এর হাতে বিভিন্ন সংস্থার প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার ১৭টি নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। আরও ১ হাজার ৭০২ কোটি টাকার ১২টি প্রকল্পের কাজ চলমান আছে।
চলমান শুদ্ধি অভিযানে গত ২০ সেপ্টেম্বর র্যাবের হাতে জি কে শামীম গ্রেফতার হন। জব্দ হয় জিকে শামীম ও তার পরিবারের লোকজনের ব্যাংক হিসাব। ফলে টাকা না থাকায় তার চলমান ১২ প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। এমনকি তার অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এ মাসের বেতন পাননি। এ অবস্থায় প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের ১২টি প্রকল্পের কাজ বন্ধ আছে। এর মধ্যে ৪৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন র্যাব হেডকোয়ার্টার্সের ৭ শতাংশ কাজ হয়েছে, নারায়ণগঞ্জের আলীগঞ্জে প্রায় ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৭২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ এখনো শুরুই হয়নি, দুই সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের ভবন নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৬৮ শতাংশ হয়েছে ও ৩২৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সচিবালয়ের ভেতরের ২০ তলা নতুন ভবন নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৩ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে পঙ্গু হাসপাতালের ভবনের। ১০২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই ভবনটির কাজের অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ।
তবে বর্তমানে শ্রমিক কর্মচারীদের বিল পরিশোধ করতে না পারায়, সব প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, টাকা দিতে না পারায় সবগুলো সাইটই বন্ধ হয়েছে।
কবে নাগাদ বন্ধ থাকা কাজগুলো শুরু হতে পারে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের মার্কেটিং ম্যানেজার নাজিম উদ্দিন বলেন, গত পাঁচদিন ধরে সব সাইটের কাজ বন্ধ। এমনকি চলতি মাসে অফিস কর্মীদের বেতনও পরিশোধ হয়নি। আমাদের কাছে নগদ কোনো টাকাও নাই। ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ। স্যারের নির্দেশ ছিল, কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার। ব্যাংক হিসাব যে বন্ধ হবে, হয়তো তিনি ধারণা করেননি।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা বলেন, এ পরিস্থিতিতে অফিস কীভাবে চলবে জানি না। সাইটগুলো চালু হবে কি-হবে না, কোনোও কিছুই বলতে পারছি না।
তবে গণপূর্ত অধিদফতর সূত্র বলছে, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী কাজ বন্ধ রাখলে নিয়ম ভঙ্গ হয়। তখন কার্যাদেশ বাতিল করে অন্য কোনোও প্রতিষ্ঠান দিয়ে কাজ করানোই একমাত্র পথ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেন, জি কে শামীমের প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। এটা আমি শুনেছি। এতে আমি চিন্তিত নই। কেননা কাজ করবে জি কে শামীমের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, জি কে শামীম নয়। শামীমের ব্যক্তিগত অজুহাতে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকবে না। কাজ বন্ধ রাখার জন্য ওই প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। না হলে শর্ত অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


												                                            





										
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										
										