লিমনকে স্বামী হিসেবে পেয়ে খুশি খুশি খাতুন

নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০১৯ :
জন্মের পর বাবা-মায়ের মুখ দেখলেও এখন আর সেই স্মৃতি মনে নেই। শিশুকাল থেকেই এ-বাড়ি ও-বাড়িতে কাজ করে খেয়ে না-খেয়ে বড় হয়েছেন। খুশি খাতুন (১৮) আজও জানে না তার বাবা-মা কে? কী তার পরিচয়? সেই এতিম মেয়ে খুশি খাতুনকে জাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিয়ে দিলেন রংপুর জেলা প্রশাসন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল রংপুর নগরীর নিউ সাহেবগঞ্জ এলাকার আজিজুল ইসলামের ছেলে মো. লিমন মিয়ার সঙ্গে খুশি খাতুনের বিয়ে। রংপুর পর্যটন মোটেলে অনুষ্ঠিত এই বিয়েতে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
রংপুরের সমাজসেবা অধিদফতর ও শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (বালিকা) বেড়ে উঠা খুশি খাতুন বিভিন্ন সময় মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করতে গিয়ে শারীরিক নির্যাতনেরও শিকার হয়েছেন। গৃহকর্তাদের লোলুপতার শিকার হয়ে কাজ ছেড়ে দিলে লোকজন তাকে থানায় সোপর্দ করে।
এরপর ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ড রংপুর সমাজসেবা অধিদফতরের সহযোগিতায় খুশিকে শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (বালিকা) রাখা হয়। ১৮ বছর পূর্ণ হলে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় তাকে চাকরি দেয়া হয় কারুপণ্য নামে শতরঞ্জি তৈরি প্রতিষ্ঠানে।
এদিকে নতুন জীবন শুরু করতে পেরে নবদম্পতি উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করে জেলা প্রশাসন সহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। সেইসঙ্গে তাদের নববিবাহিত জীবনের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
জেলা প্রশাসক আসিব আহসান জানিয়েছেন, এতিম মেয়েটি যেন অসহায়ত্ব বোধ করতে না পারে সেজন্যই আড়ম্বরপূর্ণভাবে তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। খুশির স্বামী লিমন পেশায় রাজমিস্ত্রী। এখন তাদেরকে পারিবারিক পেনশনের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। এছাড়াও জেলা প্রশাসন সবসময় খুশি ও তার পরিবারের পাশে থাকবে।