রাস্তার নাম করণ নিয়ে বিরোধর জের কেরানীগঞ্জে সাংবাদিকের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা ! মামলা নেয়নি পুলিশ

রাসেল খান,
রাস্তার নামকরণ নিয়ে বিরোধের জেরে সাংবাদিকের বাড়িতে সশস্র সন্ত্রাসী হামলার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা নেয়নি দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা পুলিশ। ওই ঘটনায় সাংবাদিকের পরিবার থানায় অভিযোগ দিলেও উল্টো সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আপোষ মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছে ওসি শাহ জামান। এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের জীবন নাশের আশংকা প্রকাশ করেছেন ওই সাংবাদিক।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিমদী নোয়াদ্দা গ্রামে দৈনিক যুগান্তরের রাজধানী প্রতিবেদক শেখ আনোয়ার হোসেন নবীনের বাড়িতে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র সহ হামলা চালিয়ে বাড়ি ভাংচুর করে। ওই সময় সাংবাদিকের পিতাকে জবাই করার জন্য সন্ত্রাসীরা খুজতে থাকে। বাড়িতে পুরুষ কাউকে না পেয়ে সাংবাদিকের পরিবারের সদস্যদের জীবন নাশের হুমকি দেয় ও বাড়ি ভাংচুর করে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। ওই ঘটনায় সাংবাদিকের চাচী খুশিনুর বেগম ওই এলাকার মৃত নাজিম উদ্দিনের ছেলে সন্ত্রাসী জামাল মিয়া (৫০) ও সামসু মিয়া (৫৫), সামছুর ছেলে ইয়াছিন হোসেন (৩২) , আলামীন (৩০) ও আশিক (২৮)। জামাল মিয়ার মিয়ার ছেলে মোঃ হাসান (২৫) ও মোঃ হোসেন (২২)। হবি মিয়ার ছেলে আব্দুল মিয়া (৪৮)। সমসের আলী মোল্লার ছেলে ওসমান মোল্লা (৫০) ও তার ছেলে সাগর মোল্লার (২২) নাম উল্লেখ করে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও রহস্যজনক কারণে মামলা না নিয়ে আপোষ মিমাংসার প্রস্তাব দেয় পুলিশ। পুলিশে অভিযোগ দেওয়ায় পুণরায় আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ওই পরিবারের উপর আবারো হামলা চালিয়ে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা পয়সা লুট করে নিয়ে যায় বলে জানান সাংবাদিক নবীন।
সাংবাদিক নবীন জানান, তার দাদা মৃত ফজর আলীর ৯০এর দশকে নোয়াদ্দা মসজিদ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তার দ্বিতীয় পুত্র শেখ মোঃ আলী হোসেন ২০০৪ সালে তৎকালীন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের চলাচলের জন্য নিজেদের যায়গায় একটি রাস্তা নির্মাণ করে রাস্তাটির নাম মাদ্রাসা রোড হিসেবে নাম করণ করেন। কিন্তু গত কয়েক বছর যাবৎ জনৈক জামাল মিয়া তার মৃত পিতার নামে রাস্তাটির নাম করণ করতে মরিয়া হয়ে উঠে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দলবলসহ রাস্তাটির পুরানো নাম ফলক উপড়ে ফেলে নতুন নাম ফলক লাগিয়ে দিলে সাংবাদিকের বাবা এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলে সন্ত্রাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় তার বাড়িতে হামলা চালায়। এ ঘটনায় সাংবাদিকের চাচী থানায় অভিযোগ দেন বলে জানান তিনি।
দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার এসআই বাসির বলেন, আমি বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে যেয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে ওসি বরাবরে রিপোর্ট করেছি। এখন ওসি সাহেব অন্য একজন অফিসারকে তদন্ত দিয়েছেন। ঘটনা তদন্তকরে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানায়, সন্ত্রাসী জামাল মিয়া তার পুত্র হাসান ও ভাতিজা ইয়াসিনকে দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের ব্যবসা করিয়ে আসছে। এ ব্যবসা করে হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়ায় এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। এছাড়া নেশা অবস্থায় প্রায়ই নারীদের উত্যক্ত করে আসছে বলে জানান তারা।
দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার ওসি শাহ জামান বলেন, সাংবাদিকের বাড়িতে হামলার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর একজন এসআইকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। ঘটনা তেমন বড় কিছু নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘটনা যতুটুকু ঘটেছে ততটুকু আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে প্রধান অভিযুক্ত জামাল মিয়ার বাড়িতে গেলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।