August 7, 2025, 7:49 pm

৬ মাসে দেশে ফেরত এসেছে ১৭ হাজার নারী শ্রমিক

Reporter Name 165 View
Update : Wednesday, October 7, 2020

প্রবাস ডেস্ক:
গত ৬ মাসে পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি ১৭ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নারী শ্রমিককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার। এইসব নারী শ্রমিকদের মধ্যে অধিকাংশই প্রবাসে গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রী কিংবা তাদের সন্তানদের হাতে নানা অজুহাতে নির্যাতিত হয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

সম্প্রতি কুমিল্লা থেকে সৌদি আরবে পাড়ি জমানো নদী আক্তার নামে এক তরুণীর গৃহকর্তার বাড়িতে রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গত ২১ আগস্ট ওই তরুণীর মৃত্যু হলেও এখনও তার মরদেহ সৌদির মর্গে পড়ে আছে।

একবুক স্বপ্ন নিয়ে সৌদি পাড়ি জমানো সেই তরুণীর লাশ দেশে নিয়ে আসতে তার বাবা মো. দুলাল শেখ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অনেক দফতরেই লিখিত আবেদন করলেও এ নিয়ে এখনও কার্যকর কোনও ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। বরং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নদী আক্তারের লাশ সৌদিতেই দাফন করার অনুমতি চেয়ে নিহতের বাবার কাছ থেকে লিখিত অনুমতি চাওয়া হচ্ছে। হতভাগ্য নদী আক্তারের বাবা সেই আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছেন।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সৌদি আরবের মদিনায় রহস্যজনকভাবে মারা যাওয়া নদী আক্তারের বাবা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমার মেয়েকে বাংলামোটরের একটি রিক্রুটিং এজেন্সি (লাইসেন্স নম্বর-২৬৫) থেকে ১৮ মাস আগে সৌদি আরবে পাঠিয়েছিলাম। এরমধ্যে সে ৫ মাসের বেতন আমাদেরকে পাঠিয়েছিল। বাকি টাকা চেয়েও আমার মেয়ে পায়নি। উল্টো মালিক বেতন না দিয়ে তাকে নির্যাতন করতো বলে নদী জানিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের আগস্টে ঢাকার রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক লালন সাহেব আমাদের টেলিফোন করে জানান, আপনার মেয়ে সৌদি আরবে মারা গেছে। কিভাবে মারা গেছে, জানতে চাইলে তিনি কোনও উত্তর দেননি।’

মো. দুলাল শেখ বলেন, ‘মারা যাওয়ার ১১ দিন আগেও আমার মেয়ে সুস্থ অবস্থায় টেলিফোনে আমার সঙ্গে কথা বলেছিল। গৃহকর্তা বা মালিক পরিবারের অন্য কেউ নির্যাতন করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। এ নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু আজও আমার মেয়ের লাশ দেশে আনার কোনও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা জানতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘গত মাসে মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি আসে আমার কাছে। তাতে লেখা ছিল- ‘আমার মেয়ে নদী আক্তার সৌদি আরবে আত্মহত্যা করেছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে’। সৌদিতেই লাশ দাফনের জন্য তারা আমার কাছে লিখিত অনুমতিও চেয়েছি। আমি বলেছি, আমি তো আমার মেয়ের লাশই দেখলাম না। ওই দেশে দাফনের অনুমতি দেবো কিভাবে?’

শুধু সৌদি আরব নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গত ৬ মাসে ফেরত এসেছে ১৭ হাজার ১৮২ জন নারী শ্রমিক। যার মধ্যে সৌদি থেকেই এসেছেন ৬ হাজার ২৫ জন। এর পরের অবস্থানেই আছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরপর কাতার ও লেবানন।

এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদের সহকারী একান্ত সচিব মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামানের পাঠানো ক্ষুদে বার্তায় জানানো হয়েছে, বিদেশ ফেরত ও আটকাপড়া কর্মীদের সহযোগিতা প্রদান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণের লক্ষ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সকল কর্মীর নিবন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে।


More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর