August 7, 2025, 2:28 am

নাগর্নো-কারাবাখ সংঘাত, মানবিক সঙ্কটের আশঙ্কা

Reporter Name 184 View
Update : Wednesday, October 14, 2020

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
নাগর্নো-কারাবাখে চলমান সংঘাত থামাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। দেশ দু’টির মধ্যে চলতে থাকা লড়াইয়ের ফলে ওই অঞ্চলে মানবিক সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলো।

আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান নাগর্নো-কারাবাখ ঘিরে চালিয়ে আসা লড়াইয়ে তিনদিন আগে যুদ্ধবিরতি করতে রাজি হওয়ার পর মঙ্গলবারও একে অপরের বিরুদ্ধে তা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। ফলে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো থেকে লড়াই বন্ধের আহ্বানের পরও ভেস্তে যেতে বসেছে যুদ্ধবিরতি।

নাগর্নো-কারাবাখের মারতুনি শহরে গোলা হামলা হতে দেখার কথা জানিয়েছেন রয়টার্সের এক ফটোসাংবাদিক। তাছাড়া, রয়টার্সের এক টিভি সাংবাদিকও মঙ্গলবার সকালের দিকে আজারবাইজানের টার্টার শহরের কেন্দ্রস্থলে গোলা হামলা হওয়ার কথা জানিয়েছেন।

আজারবাইজান বাহিনী আর্মেনিয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, আর্মেনিয়া গোরানবোয়, আঘদাম, টার্টারসহ আজেরি অঞ্চলগুলোতে গোলাবর্ষণ করছে। কিন্তু আজারবাইজান বাহিনী যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে না।

যদিও আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সঙ্গে সঙ্গেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, সাময়িকভাবে শান্ত থাকার পর আজেরি বাহিনী আবার সামরিক অভিযান শুরু করেছে।

বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলে দুই সপ্তাহ ধরে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর রাশিয়ার উদ্যোগে গত সপ্তাহে শুক্রবার মস্কোয় প্রায় ১০ ঘণ্টা আলোচনার পর উভয়পক্ষ অস্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে রাজি হয়েছিল। শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপর ওইদিন রাত থেকেই দুপক্ষ পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ করে আসছে।

এই লড়াই অচিরেই ওই অঞ্চলে বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনবে বলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। মানবিক সঙ্কট এড়াতে অবিলম্বে দুই পক্ষকে যুদ্ধবিরতির শর্ত বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানিয়েছে মিনস্ক গ্রুপ এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।

১১ সদস্যের এই মিনস্ক গ্রুপে আছে রাশিয়া এবং তুরস্কও। কিন্তু তুরস্ক নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে আলোচনায় জড়িত নয়। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, যুদ্ধবিরতির দাবি ‘যুক্তিযুক্ত’। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত আর্মেনিয়াকে আজেরি অঞ্চল থেকে সরে যেতে বলা; “অথচ, এমন কোনও আহ্বান জানানো হচ্ছে না, এটা দুঃখজনক।”

নাগর্নো-কারাবাখকে আজারবাইজান নিজেদের বলে দাবি করে এলেও আর্মেনীয় নৃগোষ্ঠীর লোকজন অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে; আর্মেনিয়াও তাদের সমর্থন দিচ্ছে। ১৯৮৮-৯৪ সাল পর্যন্ত এ অঞ্চলকে ঘিরে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ চললেও পরে একটি যুদ্ধবিরতি হয়। কয়েক দশকের মধ্যে এবারই দেশদুটি নাগর্নো-কারাবাখকে ঘিরে সবচেয়ে বড় সংঘাতে জড়িয়েছে।

বহু বছর পর নতুন করে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে এরই মধ্যে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, প্রাণ নিয়েছে শত শত মানুষের। নাগর্নো-কারাবাখ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত তাদের বাহিনীর ৫৪২ জন নিহত হয়েছে। আজারবাইজান জানিয়েছে, লড়াইয়ে এ পর্যন্ত ৪২ আজেরি নাগরিক নিহত হয়েছে। তবে সেনা কতজন মারা গেছে তা জানায়নি তারা।


More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর