November 11, 2025, 1:13 am

ইভ্যালির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করবে সরকার, যদি…

Reporter Name 149 View
Update : Monday, July 19, 2021

বহুল আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি কোনও গ্রাহক বা মার্চেন্টের দায় পরিশোধ না করলে তারা দেশের প্রচালিত আইনে সংশ্লিষ্ট আদালতে কিংবা ভোক্ত অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে মামলা করতে পারবেন।

ইভ্যালি কিভাবে তার গ্রাহক বা মার্চেন্টের বকেয়া পরিশোধ করবে, তার ব্যাখ্যা তলব করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে কোম্পানি অবসায়ন করতে লিকুইডেটর কিংবা কোম্পানির যাবতীয় সম্পদ জব্দ করতে আদালতে মামলা করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে গতকাল রবিবার (১৮ জুলাই) অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডাব্লিউটিও সেলে মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, ইভ্যালি কিভাবে তার গ্রাহক বা মার্চেন্টের বকেয়া পরিশোধ করবে, তার ব্যাখ্যা চেয়ে সোমবারই (১৯ জুলাই) চিঠি পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, ‘ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে কোম্পানি আইন অনুযায়ী আদালতের মাধ্যমে লিকুইডেটর নিয়োগ দিয়ে ইভ্যালির সম্পদ বিক্রি করে গ্রাহক ও মাচেন্টদের পাওনা মেটানো কিংবা ইভ্যালির সম্পদ জব্দ করার উদ্যোগ নেয়া হবে। এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিজেও মামলা করতে পারে।’

ব্যাখ্যা চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে চিঠি পাঠাবে, তার জবাব দিতে ইভ্যালিকে ১০ দিন সময় দেয়া হতে পারে বলে রবিবারের বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

বৈঠকে অংশ নেয়া কর্মকর্তারা বলছেন, ইভ্যালির পাশাপাশি ধামাকা শপিং, আলিশা মার্ট, ই-অরেঞ্জসহ এ ধরনের সব কোম্পানির কাছেও পর্যায়ক্রমে ব্যাখ্যা তলব করা হবে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগলোর বিজনেস মডেল পর্যালোচনা করে ব্যাখ্যা সন্তোষজনক মনে না হলে তাদের ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ নেয়া হবে।

ইভ্যালিতে প্রশাসক নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হলেও কোম্পানি আইনে এ ধরনের বিধান না থাকায় লিকুইডিটর নিয়োগ বা সম্পদ জব্দের পথেই হাঁটছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে আইনি পরামর্শ নিতে কোম্পানি আইন এক্সপার্ট ব্যারিস্টার তানজীব উল ইসলামের মতামত নেয় মন্ত্রণালয়।

এদিকে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ইভ্যালির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যে অর্থ রয়েছে কিংবা তাদের যে চলতি সম্পদ রয়েছে, তা বিক্রি করে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনা পরিশোধ করতে হলে তা আদালতের মাধ্যমেই করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের প্রচলিত আইনের মধ্যে মামলা করে আদালতের মাধ্যমে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনার বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে। ইভ্যালির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যে টাকা রয়েছে, তাও আদালতের রায় ছাড়া গ্রাহকদের ফেরত দেয়ার সুযোগ সরকারের নেই।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইভ্যালির ৬৫ কোটি টাকার চলতি সম্পদ রয়েছে। এর বাইরে কোম্পানিটির বা উদ্যোক্তাদের আরও কোনও সম্পদ আছে কি-না, তা তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান বাণিজ্য সচিব।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘প্রতারণার অভিযোগে যুবক ও ডেসটিনির বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে মামলা হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে। ইভ্যালিসহ কোনও ই-কমার্স কোম্পানি গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘গ্রাহকের টাকা অগ্রিম নিয়ে ব্যবসায় খাটানো কিংবা নতুন গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পুরনো গ্রাহকদের পণ্য দেওয়া কিংবা দায় মেটানো যাবে না। ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকায় এমন বিধান যুক্ত করবো আমরা। দীর্ঘমেয়াদে ই-কমার্সখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নতুন আইন করা হবে।’

এছাড়া গত ৪ জুলাই জারি করা ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা যেসব কোম্পানি মানছে না, তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘আমরা কোম্পানিগুলোর বিজনেস মডেল সম্পর্কেও জানতে চাইবো। কোনও কোম্পারি বিজনেস মডেল দেশের প্রচলিত আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর