৫ মাসে বিএনপির ২ সহস্রাধিক নেতা-কর্মীর কারাদণ্ড

প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাজা হচ্ছে। গত ৫ মাসে ২ হাজারের বেশি বিএনপি নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অবশ্য বিএনপির অভিযোগ, সরকার তাদের নেতা-কর্মীদের দমন-নিপীড়ন করতে দেশের সর্বোচ্চ জায়গাকে ব্যবহার করছে।
এ বিষয়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, সরকার বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে সরাসরি আদালতের অপব্যবহার করছে। গত বুধবার আদালতে এক দিনে ৬ মামলায় ১১৯ জন নেতা-কর্মীকে সাজা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার ৪৯ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যেটা সর্বোচ্চ বেআইনি। তিনি বলেন, ‘সরকার ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশ থেকে প্রায় ২২ হাজারের মতো নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এর মধ্যে বিচারের নামে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিচ্ছে।’
সূত্র জানায়, এসব নেতা-কর্মীর ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত বুধবার দণ্ডিত ১১৯ জনের মধ্যে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম, হাজারীবাগ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আজিজ, বনানী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানও। যে ছয়টি মামলায় বুধবার রায় দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে পাঁচটি মামলার বাদী পুলিশ এবং একটি মামলা ২০১৮ সালে দায়ের করা, আরেকটি ২০১৩ সালে। মামলাগুলোর মধ্যে দুটি উত্তরখান থানায় আর বাকি চারটি মামলা ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী ও কামরাঙ্গীরচর থানার। ওই দিন হাজারীবাগ থানার আরেকটি মামলায় সবাইকে খালাসও দেওয়া হয়েছে।
মামলাগুলোতে মূল অভিযোগ পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, হামলা ও ভাঙচুর। বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচির সময়ে ঘটনাগুলো ঘটে বলে অভিযোগ করা হয়।
আদালত থেকে পাওয়া তথ্যমতে, গত ৫ মাসে ১১০টি মামলায় প্রায় ২ হাজারের মতো বিএনপির নেতা-কর্মী ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানিয়েছেন, যেসব মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হচ্ছে সেগুলো সব কথিত মামলা। এসব মামলার বাদী সরকারের পুলিশ বাহিনী। তারা পুলিশের কর্তব্য পালনে বাধা এবং নাশকতার কথা উল্লেখ করেছে। বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের মধ্যম পর্যায়ের নেতারাই বেশির ভাগ এসব মামলার আসামি।
বিষটি সম্পর্কে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু জানিয়েছেন, কাউকে রাজনৈতিকভাবে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হচ্ছে, তারাই শুধু দণ্ডিত হচ্ছেন। আইন মেনেই এসব বিচারব্যবস্থার কার্যক্রম চলছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, আদালত যেটা করছেন, আইন মেনেই করছেন। বুধবার মোট ছয়টি মামলায় বিএনপির ১১৯ জন নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া নিয়ে নতুন করে একটি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই রায়গুলো দিয়েছেন।