খোলা আকাশের নিচে ঠাঁই নিয়েছে বুড়িচংয়ের হাজারো মানুষ

উজান থেকে নেমে আসা পানি ও কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ভেঙে গেছে গোমতী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ। এতে বুড়িচং উপজেলার ৯টি ইউনিয়নই এখন পানির নিচে। এমতাবস্থায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিলেও খোলা আকাশের নিচে জায়গা হয়েছে অনেক পরিবারের।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকালে ভেঙে পড়া গোমতীর বাঁধ এলাকা জেলার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়ায় বাঁধের ওপর এ দৃশ্য দেখা গেছে।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বাঁধের ওপর খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেয়া এসব মানুষের কেউ কেউ সড়কের পাশে শুয়ে আছেন। এদের মধ্যে অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ, অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ অনেক শিশু রয়েছে। স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়েই আশ্রয় নিয়েছেন এসব মানুষ। অনেকেই অটোরিকশাকে ঘরের মতো বানিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন। কেউ কেউ শামিয়ানা টাঙিয়ে খাট পেতেছেন সড়কে।
বাঁধ ভাঙার বিষয়টি আগে থেকে কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিলেন কেউ কেউ। ঘরের দামি আসবাবপত্রসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল সরিয়ে বাঁধের ওপর নিয়ে আসতে পেরেছিলেন সেসব মানুষ। যেসব পরিবারে পুরুষ ছিল না, সেসব পরিবারের নারীরা কোনোরকম জীবন বাঁচিয়ে বাঁধে ওঠেন সন্তানদের নিয়ে। ওইসব পরিবারের সবকিছুই তলিয়ে গেছে পানিতে।
খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, তাদের কাছে এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি। শুকনো খাবার আর বিশুদ্ধ পানির সংকট পোহাচ্ছেন তারা। কয়েকটি সামাজিক সংগঠন ত্রাণ সহায়তা দিলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন তারা।
রাস্তায় আশ্রয় নেয়া সিরাজ মিয়া বলেন, কখনো ভাবিনি এমন দিন আসবে। রাত ১১টার পর বাঁধ ভাঙা নিয়ে হই চই পড়ে। তখন সামনে যা পেয়েছি নিয়ে বাঁধে উঠেছি। ঘরবাড়ি সব তলিয়ে গেছে।
আলী আহমেদ নামের একজন বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। এখানে আমাদের খাবার-পানি সংকটের পাশাপাশি টয়লেটের সমস্যাটাও অনেক বেশি। শত শত নারীও এখানে আছে।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও সাহিদা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেয়া মানুষদের সহায়তা করা হবে। তালিকা করা হচ্ছে।