ফার্নিচার মার্কেটের পূর্বের মালিকরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের কষ্টের টাকায় গড়া ফার্নিচার মার্কেটটি হঠাৎ করে রাজউকের অনুমতি ছাড়া এবং বৈধ কোন কাগজপত্র ছাড়াই মালিকানা দাবি করে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে জোড়পূর্বক দখলে নিয়েছেন এবং ২৩ জন ব্যবসায়ীকে চাপপ্রয়োগ করে ভাড়াচুক্তি দলিল চাঁদাবাজি করছেন।
জানা যায়, ২০১৯ সালে উত্তরা সোনারগাঁ জনপদ রোডের দুই পাশের রাজউকের অবরাদ্ধাকৃত মোট ১৮ টি খালি প্লটে উপর ফার্নিচার মার্কেট নির্মান করেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা, তারা হলে সোহেল, বিপুল, জিদান, ইউনুস, নূর হোসেন জহির, খোকন, ইফতেকার জুয়েল, কবির হাসান, রিকু বাপ্পি, হাসান, জজ মিয়া সহ বেশ কযেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
খোজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত ওমর ফারুক দিপু ২০০৭ সালে সোনারগাঁ জনপদ রোডে রাজউকের খালি চারটি প্লট বরাদ্দের জন্য ২০ লাখ টাকা জামানত দিয়ে রাজউক বরাবর আবেদন করেন। আবেদনের পর ২০০৯ সালে অভিযুক্ত দিপুর আবেদনটি খারিজ করে দেন রাজউক কতৃপক্ষ।
পরে প্লট বরাদ্দ না পেয়ে দিপুর রাজউকে জমা দেয়া জামানতের ২০ লাখ টাকা ফেরত না নিয়ে উল্টো হাইকোর্টে একটি রিট রিপিরেশন জারি করেন রাজউকের বিরুদ্ধে যা এখনো চলমান রয়েছে। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় ২০১৬ সালে শেখ হেলালের পিএস ওয়ালিদের শেল্টারে নিয়ে ৫৯,৬১,৬৩,৬৫ চারটি প্লটে একটি কাঁচা বাজার মার্কেট নির্মান করেন এবং ৩২ জন ব্যবসায়ীদের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা জামানত নিয়ে যার যার পজিশন বুঝিয়ে দেন। বছর ঘুরতে না ঘুরতে বৈধ কোন কাগজপত্র না থাকায় ২০১৭ সালের শেষের দিকে রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান পরিচলনা করে কাঁচাবাজারটি ভেঙে দেয়। তখন ওমর ফারুক দিপু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেয়া জামানতের টাকা ফেরত না দিয়ে পালিয়ে যান। পরে ব্যবসায়ীরা পাওনা টাকা ফেরত না পেয়ে ওমর ফারুক দিপু নামে উত্তরা পশ্চিম থানায় তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো সাধারন ডায়েরি করে এবং সিএমএম কোর্টে মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ রয়েছে অবৈধ ভাবে মার্কেটটি দখলে নেয়ার পর থেকে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নামে এবং থানা পুলিশের নামে মার্কেট থেকে প্রতিমাসে মোটা অংকের চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এসব দখলের পিছনে মোস্তফা, শাহআরম,মুনছুর নামের তিন ব্যাক্তি।
গত ৫ই আগস্ট সরকার পতনের পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের দেয়া হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যখন আত্মগোপনে চলে যায় ঠিক তখনই সুযোগ বুঝে ওমর ফারুক দিপু সহ তার লোকজন উক্ত ফার্নিচার মার্কেটটি ক্ষমতার দাপটে দখলে নেন। দখলে নেয়ার পর ২৩ জন ব্যবসায়ীর নিকট হতে পজিশন ভিত্তিতে ভাড়াচুক্তিনামা দলিল করে চাঁদাবাজি করছেন। বর্তমানে ওমর ফারুক দিপু নিজেকে মালিক দাবি করে ব্যবসায়ীদের নিকট হতে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পের মাধ্যমে লিখিত ভাড়াচুক্তিনামা দলিল করেছেন যার প্রমান প্রতিবেদকের কাছে রয়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন আমরা আগে যাদেরকে ভাড়া দিতাম তাদের ভাড়া দিতে নিষেধ করে দিয়েছেন দিপু সহ তার লোকজন। মার্কেটটি দখলে নিয়ে জোড়পূর্বক আমাদের দোকান প্রতি নতুন করে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তি করিয়েছেন। আমরা বাধ্য হয়ে চুক্তিনামা দলিল করেছি।
কোন কাগজের মূলে প্লট গুলোর মালিকানা দাবি করছেন এবং ২৩ জন ব্যবসায়ীর নিকট ভাড়াচুক্তি দলিল করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওমর ফারুক দিপু প্রতিবেদককে জানান, আমার কোন কাগজপত্র না থাকলে কি আমি ভাড়াচুক্তি দলিল করতে পারি বলেন । আপনি আমার গুলশান অফিসে আসেন।
এবিষয়ে রাজউকের ডিডি ইফতেখারুল ইসলাম কে একাধিকবার ফোন করলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।