August 21, 2025, 2:36 am

রায়পুরে ‘ভুয়া’ সমন্বয়ক সিয়ামের ত্রাসের রাজত্ব

Reporter Name 204 View
Update : Friday, November 22, 2024

এক ‘ভুয়া’ সমন্বয়কের সন্ধান মিলেছে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরে। কখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, আবার কখনো উপজেলা প্রশাসনের লোক হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে মানুষকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এই সমন্বয়কের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সমন্বয়ক হচ্ছেন যুব রেড ক্রিসেন্ট’র রায়পুর উপজেলা কো-অর্ডিনেটর আল মাজেদ সিয়াম।

সম্প্রতি রায়পুরে মাসব্যাপী শিল্প ও পণ্য মেলার পার্কিংয়ের টাকাও সিয়ামের হাত দিয়ে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যায়, মর্মে অভিযোগ উঠেছে। যা সে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়েই নিয়েছে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রায়পুর উপজেলায় নেই কোনো কমিটি।

রায়পুরের ছাত্র প্রতিনিধি জুবায়ের আল ইয়াসিনসহ একাধিক ছাত্র প্রতিনিধি জানায়, সিয়াম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ না। তারা আরও জানায়, সিয়াম উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মারুফ বিন জাকারিয়ার ঘনিষ্ঠজন। সে আগে আওয়ামী লীগ নেতা মারুফের মোটরসাইকেল চালক ছিলো।

তারা জানায়, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে চলমান মেলাতে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে সিয়াম একটি ফুডকার্টের স্টলও নেয় বাগিয়ে। এমনকি মেলার পার্কিংয়ের টাকা তোলার দায়িত্বও তার হাতে। ভুয়া এই সমন্বয়ক পুরো উপজেলা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

তার বিরুদ্ধে ফুডকার্ট ব্যবসায়ী রাব্বানী বলেন, রায়পুর মাসব্যাপী শিল্প ও পণ্য মেলার শুরু হওয়ার আগের দিন (১৩ নভেম্বর) রাতে আমি আমার ফুডকার্ট গাড়ি নিয়ে আসি। উপজেলা পরিষদের প্রবেশের মুখে সিয়াম আমাকে বাঁধা দিয়ে সিয়াম বলে মেলা আমার ফুডকার্টের স্টল ছাড়া আর কেউ দিতে পারবে না। সিয়াম নিজেকে প্রথমে উপজেলা প্রশাসনের লোক আবার সমন্বয়ক হিসেবে আমাকে পরিচয় দেয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো তিনি কখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বা ছাত্র প্রতিনিধি না। আবার উপজেলার কোনো কর্মকর্তা নয় তাহলে সে এতো প্রভাব কীভাবে দেখায় এবং সিয়াম তো আওয়ামী লীগের লোকদের নির্বাচনী প্রচারণাতেও সক্রিয় ছিলো।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রায়পুর উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি আবদুল মোতালেব বলেন, রায়পুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কমিটি নেই। সমন্বয়ক বা ছাত্র প্রতিনিধিদের নাম ভাঙিয়ে ফায়দা লুটে নেওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক।

মেলার কতৃপক্ষ আলম বলেন, গাড়ির পার্কিং আমরা দেখি না। সিয়ামকে আমাদের পক্ষ থেকে পার্কিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

মেলার পার্কিংয়ের বিষয়ে সিয়াম সাংবাদিককে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, সেখানে উপজেলার স্টাফদের কিছু গাড়ি থাকবে সেগুলো দেখভাল করার জন্য। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে এমন বিষয়ে জানতে চাইলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন, পুনরায় মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি সরাসরি আসার প্রস্তাব দেন। এক পর্যায়ে আবারো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান খান বলেন, টাকা নেয়া বা চাঁদাবাজির বিষয়টি আমার জানা নেই। সিয়ামকে রেড ক্রিসেন্ট সদস্য হিসেবে জানি। তাকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলার পার্কিংয়ের কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

লক্ষ্মীপুর জেলা যুব রেড ক্রিসেন্টের যুব প্রধান আশরাফ বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত সত্য প্রমাণিত হলে সাংগঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর