আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন মিথ্যা: আইন মন্ত্রণালয়

ভারতের অনলাইন পোর্টাল নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়াতে “জম্মু-কাশ্মীরে হামলার পর বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টার সঙ্গে শীর্ষ লস্কর-ই-তৈয়বা অপারেটিভের সাক্ষাৎ” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, মানহানিকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ২৪ এপ্রিল প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উত্থাপন করা হয়েছে, তা বাস্তবতা বিবর্জিত ও সম্পূর্ণ কাল্পনিক।
বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পেহেলগ্রামে হত্যাকাণ্ডের পর লস্কর-ই-তৈয়বার এক শীর্ষ সদস্যের সঙ্গে আইন উপদেষ্টার সাক্ষাৎ হয়েছে- যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এ ধরনের তথ্য গুজব ছড়ানো ও জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির শামিল।”
মিথ্যা দাবি ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সংশোধনে বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “হেফাজতে ইসলাম নেতাদের প্রতিবেদনে ভুলভাবে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের একটি আইনের আওতায় থাকা ইসলামিক স্কলারদের সংগঠন। শেখ হাসিনার আমলে তাদের হাজার হাজার সদস্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ের করা মিথ্যা মামলার শিকার হয়। নতুন সরকারের ন্যায়বিচার ও সংস্কারের অংশ হিসেবে উপদেষ্টা ড. নজরুল তাদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন। ঐ বৈঠকে শুধুমাত্র আইনগত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় এবং তা নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত তারিখের অন্তত তিনদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়।”
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “হেফাজতের নেতারা এখন রাজনৈতিক সংলাপের অংশ এবং কনসেনসাস বিল্ডিং কমিশনের আলোচনায় সক্রিয়। পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের সঙ্গেও তারা বৈঠক করছেন, যা তাদের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা ও গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণ করে।”
হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, “হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো পূর্ববর্তী সরকারের আমলে হেফাজতের ওপর চালানো দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ও নিন্দা জানিয়েছে। এসব সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছে।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় আইন উপদেষ্টার কার্যক্রম প্রসঙ্গে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বলা হয়, প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে উপদেষ্টা একটি উসকানিমূলক ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, তিনি একজন ভারতীয় নাগরিকের লেখা একটি পোস্ট শেয়ার করেন যেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়েছিল। উপদেষ্টা সেখানে হামলার নিন্দাও জানিয়েছিলেন। যেহেতু এতে ভুল বোঝাবুঝির আশঙ্কা ছিল, তিনি স্বেচ্ছায় কিছু সময়ের মধ্যে পোস্টটি সরিয়ে ফেলেন।
বিবৃতির শেষ অংশে বলা হয়, পেহেলগ্রামের এই বর্বরোচিত হামলার নিন্দা ও নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা। হামলার দ্রুত বিচার দাবি করেন তিনি। নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ার এমন বানোয়াট ও তথ্যভিত্তিহীন প্রতিবেদন সাংবাদিকতার মৌল নীতিমালা ও নিরপেক্ষতা থেকে ভয়াবহ বিচ্যুতি। আমরা সব গণমাধ্যমকে সত্য যাচাই ছাড়া এমন বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।