July 30, 2025, 5:16 pm

পানিতে আঙুল কুঁচকে যাওয়ার কারণ জানালেন বিজ্ঞানীরা

Reporter Name 93 View
Update : Tuesday, June 10, 2025

একটি বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দিয়ে দেখবেন যে, দীর্ঘ সময় পানিতে থাকলে বা সাঁতার কাটলে আমাদের হাত ও পায়ের আঙুল কুঁচকে যায়। আর এ বিষয়টি নিয়ে সাধারণভাবে ভুল ধারণা করা হয় যে, পানি শোষণের ফলে আমাদের আঙুল ফুলে যায়, আর তখন কুঁচকে যায়।
তবে বিজ্ঞানীরা নতুন এক পরীক্ষায় ভিন্ন তথ্য জানাচ্ছেন। আমাদের রক্তনালির কারণেই এমনটা হয় বলে তারা জানাচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বিংহ্যামটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিজ্ঞানী গাই জার্মান ও তার দল আঙুল কুঁচকে যাওয়ার রহস্য উন্মোচনে কাজ করছেন। গবেষণার অংশ হিসেবে ৩ জন স্বেচ্ছাসেবককে ৩০ মিনিটের জন্য আঙুল ভিজিয়ে রাখার জন্য নিয়োগ করা হয়।

বিজ্ঞানীরা ভেজা ত্বকে তৈরি প্রাকৃতিক স্থানের উঁচু ভূমি ও উপত্যকার ধরন পর্যবেক্ষণ করেছেন। প্রথমবার ত্বক ভেজানোর পরে ২৪ ঘণ্টা পর আবার একই চিত্র দেখা যায়। ২৪ ঘণ্টা পর ত্বক ভিজিয়ে রাখার সময় একই ধরন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুনরাবৃত্তি হয়।

গাই জার্মান বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমিও অনেক দিন ধরে এটা ভেবেছি। দেখা যাচ্ছে যে এমনটা আসলে আমাদের শরীরের স্বায়ত্তশাসিত স্নায়ুতন্ত্রের কারণে হয়। আমাদের অনিচ্ছাকৃত নড়াচড়া যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস, চোখের পলক ফেলা ও হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করে স্বায়ত্তশাসিত স্নায়ুতন্ত্র। রক্তনালি যেভাবে সংকুচিত হয় ও শিথিল হয়, তা নিয়ন্ত্রণ করে স্বায়ত্তশাসিত স্নায়ুতন্ত্র। আসলে রক্তনালির এই সংকোচনের ফলে দীর্ঘ সময় ধরে সাঁতার কাটার পর ত্বক কুঁচকে যায়। যখন আপনার হাত ও পা কয়েক মিনিটের বেশি সময় ধরে পানির সংস্পর্শে আসে, তখন আপনার ত্বকের ঘামের নালি খুলে যায়, যার ফলে ত্বকের টিস্যুতে পানি প্রবাহিত হতে পারে। এই অতিরিক্ত পানি ত্বকের ভেতরে লবণের অনুপাত হ্রাস করে। স্নায়ুতন্তু মস্তিষ্কে লবণের মাত্রা কম হওয়ার বার্তা পাঠায় তখন। তখন স্বায়ত্তশাসিত স্নায়ুতন্ত্র রক্তনালিকে সংকুচিত করে প্রতিক্রিয়া জানায়। রক্তনালি সংকুচিত হওয়ার ফলে ত্বকের সামগ্রিক আয়তন হ্রাস পায়। সেই কারণে ত্বকের স্বতন্ত্র বলিরেখা দেখা যায়। তখন আঙুলকে আঙুর কোঁচকানো কিশমিশের মতো মনে হয়। ত্বক তার পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফলের চেয়ে বেশি আয়তন হারিয়ে ফেলে’।

পানিতে ভেজা আঙুলে সাধারণত একই ধরনের কোঁচকানো প্যাটার্ন দেখা যায়। যেহেতু একই রক্তনালি এমন আচরণ করে, তাই তাদের অবস্থান খুব বেশি পরিবর্তন হয় না। জার্নাল অব দ্য মেকানিক্যাল বিহেভিয়ার অব বায়োমেডিকেল ম্যাটেরিয়ালস–এ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। যে ব্যক্তির আঙুলের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের আঙুল কুঁচকায় না। গবেষকেরা দেখেছেন, কোঁচকানো ত্বক মসৃণ ত্বকের তুলনায় পানির নিচে বেশি গ্রিপ প্রদান করতে পারে। এতে পানির নিচে হাঁটা সহজ হয়। পিছলে যাওয়ার আশঙ্কা কম করে।

সূত্র: ডেইলি মেইল


More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর