August 21, 2025, 8:31 pm

করোনা চিকিৎসায় দেশের প্রথম ফিল্ড হাসপাতালের যাত্রা শুরু

Reporter Name 198 View
Update : Wednesday, April 22, 2020

চট্টগ্রাম:
দেশের প্রথম ৬০ শয্যার আইসোলেশন বিশেষায়িত ফিল্ড হাসপাতাল মাত্র ২০ দিনেই গড়ে উঠেছে । জ্বর-সর্দি, হাঁচি-কাশি, শ্বাসকষ্টসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে রোগী বা করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিবে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট এলাকার এই বিশেষায়িত হাসপাতাল।

করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা যখন রোগীর চিকিৎসা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে চট্টগ্রামে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করলেন চট্টগ্রামে কৃতি সন্তান ও আমেরিকান ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া। নামকরণ করা হয়েছে ‘চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল’। এটি হচ্ছে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবায় দেশের প্রথম ফিল্ড হাসপাতাল।

বেসরকারি এ করোনা হাসপাতালটির সেবা ২২ এপ্রিল (বুধবার) থেকে সেবা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের পাকা রাস্তার মাথায় নাভানা গ্রুপের একটি ওয়্যার হাউজ রয়েছে। ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া নাভানা গ্রুপের কাছে ওয়্যার হাউজের একটি শেড চেয়ে আবেদন করেন। এতে দ্রুত সাড়া দেন নাভানা গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম। তার পৃষ্টপোষকতা ও সহযোগিতায় সাড়ে ৭ হাজার বর্গফুটের ৬০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালটি গড়ে ওঠেছে। এতে ১০জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও ৫জন নার্সসহ ৫০জন কর্মকর্তা-কর্মচারি রয়েছে। সংগ্রহ করা হয়েছে চিকিৎসক, নার্স স্বেচ্ছসেবকদের জন্য প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম।এছাড়া ১০ টি আইসিইউ বেড, ৫টি ভেন্টিলেটর, একটি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি মাইক্রোবাস সংগ্রহ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপতালের উদ্যোক্তা ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া জানান, দেশের করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে চট্টগ্রামের সন্তান হিসাবে চট্টগ্রামেই একটি হাসপাতাল গড়ে তোলার তাগিদ অনুভব করেন। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন নাভানা গ্রুপ। সাধারণ মানুষকে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচানোর জন্য দিন-রাত কাজ করে এ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর অস্থায়ী হাসপাতালটি আবার নাভানা গ্রুপকে হস্তান্তর করা হবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক ভিপি ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া আরো জানান, আপাতত আইসিইউ সুবিধা ছাড়াই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা শুরু হচ্ছে। তবে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ও সিভিল সার্জন আশ্বস্ত করেছেন প্রয়োজন মোতাবেক জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ সুবিধা নিতে পারবেন রোগীরা।

বিশ্ব প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের পরিচালক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, বাংলাদেশ মহামারি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সেটি চিন্তা করে এই আইসোলেশন হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশে আরো এ ধরনের হাসপাতাল দরকার। সাধারণ রোগীর হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি করানো হচ্ছে বলেই দ্রুত এর বিস্তার ঘটছে। লকডাউন করতে হচ্ছে একের পর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ইউনিটকে। অজান্তেই আক্রান্ত হচ্ছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সেবকরা।

এক প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার কৃতি সন্তান আমেরিকান ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া জানান, করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবায় প্রতি মাসে প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ হবে। এ টাকা সমাজের বিত্তবানদের অনুদান থেকে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া।

দেশের প্রথম স্থাপিত চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল (সিএফএইচ) বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির জানান, জনস্বার্থে এমন বেসরকারি উদ্যোগকে স্বাগত। যদিও হাসপাতালটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এখনও অনুমোদন পায়নি। তবে, দুর্যোগকালীন সময়ে অনুমোদনের প্রয়োজনও হয় না। যেহেতু জনস্বার্থে এ হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে, সেহেতু স্বাস্থ্য মন্ত্রাণালয়ের পক্ষে চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালকে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে। মনিটরিং করা হচ্ছে, হাসপাতালটির যাবতীয় কার্যক্রম বলেন ডা. হাসান শাহরিয়ার।


More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর