আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
লাদাখের বিরোধপূর্ণ সীমান্তে মে মাস থেকে শুরু হওয়া উত্তেজনা প্রতিমুহূর্তেই পরিবর্তন হচ্ছে। ভারত ও চীন উভয়পক্ষে দফায় দফায় বৈঠকেও আসেনি কোনও সমাধান। উল্টো ১৫ জুন উভয়পক্ষের সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়। এরপর থেকে উত্তেজনা চরমে রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ট্যাংক-সাঁজোয়াযান সহ বিপুল সেনা সীমান্তজুড়ে মোতায়েন করছে চীন। পূর্ব লাদাখের প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে স্পানগর গ্যাপে মোতায়েন রয়েছে ভারতীয় সেনাও। এমনকি ভারতীয় সেনাদের শ্যুটিং রেঞ্জের মধ্যে চলে এসেছে চীনা সেনারা। ফলে ভারতীয় সেনাদের জন্য জারি করা হয়েছে চূড়ান্ত সতর্কতা। চীনা উসকানিতে কোনওভাবেই যেন ভারত পা না দেয়, সেই নির্দেশও জারি করা হয়েছে।

আগস্ট মাসের ৩০ তারিখ থেকে গুরুং হিল ও মাগার হিলের মধ্যবর্তী স্পানগর গ্যাপে অবৈধভাবে সেনা মোতায়েন করেছে চীন। প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে চুশুলের কাছে দখলদারী এই সেনা মোতায়েনের মূল উদ্দেশ্য। দুই দেশই শ্যুটিং রেঞ্জের মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।

উভয়পক্ষে একদিকে চলছে আলোচনা, অন্যদিকে সীমান্তে একের পর এক সেনা ব্যাটালিয়ন মোতায়েন। দু’দেশই দ্বিচারিতার খেলা ভালোই খেলে চলেছে। এই অবস্থার মধ্যেও সম্প্রতি সীমান্ত উত্তেজনা নিরসনে ভারতের সঙ্গে ৫ দফা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সম্মতি দেয় চীন। রাশিয়ার মস্কোয় দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সম্মতি দেন। কিন্তু সেই আলোচনাও ব্যর্থ হয়ে গেছে।

ব্রিগেড কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক কার্যকর না হওয়ায় আরও একটা বৈঠকের আয়োজন করতে চাইছে ভারত। দিল্লির ভাষ্য আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানের পথ খুঁজে বের করা উচিত। কিন্তু সেপথে হাঁটতে রাজি নয় বেইজিং। যদিও চীন এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আলোচনাতেই সমাধান খুঁজছে।

উল্লেখ্য, প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তের ওপর এখন উড়ছে ভারতীয় পতাকা। চীনা সেনাদেরকে পুরোনো অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি ভারতের। তবে পূর্ব লাদাখে এখনও বেশ কিছু এলাকায় নতুন করে ঘাঁটি তৈরি করেছে চীনা সেনারা। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের খবর, প্যাংগং লেক এলাকায় নতুন করে সেনাছাউনি চোখে পড়েছে।

কৌশলগত দিক থেকে এই এলাকায় যে দেশ প্রভাব ধরে রাখতে পারবে, তারা সামরিক দিক থেকে এ এগিয়ে থাকবে। এই বিষয়টা মাথায় রেখেই স্পানগার লেকের দক্ষিণ প্রান্তে ইতিমধ্যে একটি রাস্তা তৈরি করেছে চীন। যার মাধ্যমে চীনা সেনারা যাতায়াত করতে সক্ষম।

সেখানে তৈরি হয়েছে চীনা সেনাঘাঁটিও। এই এলাকা থেকেই চীনা সেনাকে সরে যাওয়ার কথা জানিয়েছিল ভারত। তবে তাতে যে তারা কর্ণপাত করেনি, তা বলাই বাহুল্য। তবে শুধু প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তই নয়, স্পানগার গ্যাপ এলাকাও দখল নিয়েছে ভারতীয় সেনা। এই এলাকা সেনা মুভমেন্টের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।