September 13, 2025, 2:13 pm

দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনারের পাশে ইংরেজি নামফলক

Reporter Name 146 View
Update : Sunday, February 21, 2021

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পরিষদ চত্বরে নির্মিত শহীদ মিনারের সামনে ইংরেজি বর্ণ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে আদিতমারী নামফলক। আর উপজেলা প্রশাসন বলছে, সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যই শহীদ মিনারের পাশে ইংরেজি অক্ষরে নামফলক নির্মাণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলাজুড়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় অর্থে ওই উপজেলা পরিষদ চত্বরে নির্মাণ করা হয় একটি দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার। আর ওই শহীদ মিনারের সামনেই ইংরেজি মোটা অক্ষরে তৈরি করা হয় নামফলক। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের এমন পরিকল্পনাহীন কাজে জেলাজুড়ে বিতর্কের জন্ম দেয়।

ক্ষুব্ধ ভাষাসৈনিক, ভাষাপ্রেমীসহ গোটা জেলাবাসী। তারা ভাষার মাসেই শহীদদের সম্মানার্থে দ্রুত ইংরেজি বর্ণ অপসারণ করে ফলকটিতে বাংলা বর্ণ ব্যবহারের দাবি জানিয়েছেন।

আদিতমারীর ইউএনও মনছুর উদ্দিন বলেন, যৌথ পরিকল্পনায় ও সকলের সঙ্গে আলোচনা করেই তৈরি করা হয়েছে ওই নামফলক। উপজেলা পরিষদের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্যই শহীদ মিনারের পাশে ইংরেজি অক্ষরে উপজেলার নাম ফলকটি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বিষয়টি দোষের কিছু নয় বলেও দাবি করেন।

এদিকে লালমনিরহাটের ভাষাসৈনিক আব্দুল কাদের ভাসানী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যে বাংলা ভাষার জন্য লড়াই করেছি, আন্দোলন করেছি, যে ভাষার জন্য কতজন বুকের তাজা রক্ত মাটিতে ঠেলে দিয়েছেন, আজ সেই ভাষাকে অমর্যাদা করা হচ্ছে। বাংলা ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের স্মরণেই নির্মিত হয়েছে শহীদ মিনার। আর সেই শহীদ মিনারের সামনে ইংরেজি বর্ণমালা থাকা বাংলা ভাষাকে অপমান এবং অমর্যাদা করা। তিনি দ্রুত ইংরেজি বর্ণমালা অপসারণ এবং বাংলা ভাষার অমর্যাদাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

ভাষাসৈনিক জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, উপজেলা প্রশাসনের এই নির্বুদ্ধিতা মেনে নেয়ার মতো নয়। কত শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই বাংলা ভাষা। রক্তে ঝরা মায়ের ভাষাকে উপজেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা কখনোই অপমান করতে পারেন না। তিনি দ্রুত ইংরেজি বর্ণমালায় লেখা নামফলকটি অপসারণ করে সেখানে বাংলা বর্ণমালা ব্যবহার করে নামফলক নির্মাণের দাবি জানান।

লালমনিরহাট জেলার একমাত্র বীর প্রতীক ক্ষেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) আজিজুল হক ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন এবং বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরে জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না এবং বাংলা রাষ্ট্র ভাষাও হতো না।

তিনি বলেন, ভাষার মর্যাদা রক্ষায় জীবনদান ও বাংলা ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নজির বিশ্বে আর নেই। তিনি এই ভাষার মাসেই দ্রুত ইংরেজি বর্ণমালা অপসারণের দাবি জানান।


More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর