1. shahinit.mail@gmail.com : dhaka24 : ঢাকা টোয়েন্টিফোর
  2. arifturag@gmail.com : ঢাকা টোয়েন্টিফোর : ঢাকা টোয়েন্টিফোর
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:০১ অপরাহ্ন

বিপর্যয় রোধে সচেতনতাই ভরসা

Dhaka24 | ঢাকা টোয়েন্টিফোর -
  • প্রকাশ | রবিবার, ৪ জুলাই, ২০২১
  • ২৬৫ পাঠক

জসিম উদ্দিন দেশের সফল উদ্যোক্তা। বিভিন্ন বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই-এর সহ-সভাপতির পদে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। করোনার মহাবিপর্যয়ের এই সময়ে তিনি শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যে করোনা অভিঘাত মোকাবিলায় সরকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। যা বাস্তবায়ন হচ্ছে। রাজস্ব আদায় কমে গেছে। ট্রেডবডির নেতা হিসেবে তাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। সভাপতি হিসেবে এসব নিয়ে তিনি কী ভাবছেন? সাক্ষাৎকার।

করোনার প্রথম ঢেউ ঢাকাকেন্দ্রিক ছিল, নগরকেন্দ্রিক ছিল। এবার গ্রামকেন্দ্রিক। প্রথম ঢেউয়ের শুরুতে উৎপাদনে আঘাত হানলেও আস্তে আস্তে তা সারিয়ে ওঠে। কিন্তু‘ ভোগের যে জায়গাটা সেই গ্রামে সেই সময়ে কোনো আঘাত হানতে পারেনি। এবার গ্রাম থেকে শুরু। যেখানে আমাদের অভ্যন্তরীণ ভোগের ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়। এর ফলে উৎপাদন হলেও ভোগ সমস্যার প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থান, বিপণন, যোগযোগ সবক্ষেত্রে। দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি হিসাবে বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন?
আগে শুরু হয়েছিল ঢাকাকেন্দ্রিক। এবার যেহেতু গ্রামকেন্দ্রিক সংক্রমণ শুরু হয়েছে- এজন্য এটা একটু কঠিন হয়ে গেছে। সরকার কোভিড নিয়ে যতটা কাজ করছে তা কিন্তু‘ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের যে অঙ্গগুলো আছে, সরকারের এই প্রশাসনিক অঙ্গগুলো দিয়েই কাজ করছে। এটা নগরীর জন্য ঠিক আছে। এবার গ্রাম থেকে শুরু হয়েছে, গ্রামে গিয়ে কী পুলিশ, বিজিবি মানুষকে মাস্ক পরাতে পারবে? এখন আমার যেটা মনে হয় তা হলো, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য দুইটা পথ আছে। একটা হচ্ছে টিকা দেওয়া। টিকার কারণে হার্ড ইমিউনিটি চলে আসবে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে সচেতনতা।

এখন সরকার লকডাউন দিচ্ছে। এইগুলো করার জন্য এখন যে দল ক্ষমতায়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সেই দলের প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহবানে আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগের ছেলেরা কৃষকের ধান কেটে কৃষকের ঘরে তুলে দিয়েছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মোকাবিলায় তাদের সম্পৃক্ততা সেভাবে দেখছি না। আমার কাছে মনে হচ্ছে, যেহেতু করোনা গ্রামে চলে গেছে, পুলিশ দিয়ে এখন তো আর গ্রামে মাস্ক পরানো যাবে না। শহরের মানুষ কিছুটা সচেতন আছে- প্রিন্ট গণমাধ্যম, টেলিভিশন ইত্যাদির কারণে। বলা যায়, গ্রামের মানুষ সেভাবে সচেতন নয়। সেই পথে আমি মনে করি আমরা রাজনৈতিক নেতাকর্মী, গ্রামের মুরব্বি, ইউনিয়ন কাউন্সিল, পৌরসভা স্থানীয় সরকার, এদেরকে সম্পৃক্ত করা এখন জরুরি হয়ে গেছে।

একটি জিনিহ আপনারা লক্ষ্য করবেন, আমাদের পুলিশ ডিপার্টমেন্ট খুব সফলতার সঙ্গে একটি কাজ করতে পারছে। সেটা হলো গাড়ির সিটবেল্ট লাগানো এবং মটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট পরানো। তারা মিডিয়া ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে কাজটি করেছিল। তারা সফল হয়েছিল। এখন মানুষ গাড়িতে উঠেই সিটবেল্ট লাগায়, ড্রাইভাররাও সিটবেল্ট লাগায়। মটরসাইকেল চালকরাও হেলমেট লাগায়। করোনা প্রতিরোধে লকডাউনের পাশাপাশি এ রকম সচেতনতা কর্মসূচিতে যাওয়া দরকার। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এ কাজটা করতে হবে। তাছাড়া এই সময়ে সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে পারছি না। এই যে লকডাউন দেওয়া হচ্ছে, কয়দিন লকডাউন দেবে? লকডাউন দিয়ে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হবে, সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাহলে তাদের দায়িত্ব কে নেবে? খেটে খাওয়া মানুষের দায়িত্ব কে নেবে। এই যে হোটেল বন্ধ করে দিলাম, দোকান বন্ধ করে দিলাম, গণপরিবহন বন্ধ করে দিলাম। এরা কতদিন চলবে, মালিকের ব্যবসা না থাকলে কতদিন চালাবে? যে চাকরিচ্যুত হচ্ছে, বেতন পাচ্ছে না। তারপরে যারা ডেইলি বেসিসে কাজ করে, ডেইলি পাকা নেয়। এরা কিভাবে চলবে ?

এক্ষেত্রে সরকার উদ্যোগ নেওয়ার ফলে হয়তো উৎপাদনটা চলমান থাকবে। পরিবহন দিয়ে শ্রমিকদের আসা-যাওয়ারও ব্যবস্থা করল। উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে ডকুমেন্টেশনের জন্য ব্যাংকও খোলা রাখতে হচ্ছে। দোকান যদি বন্ধ থাকে, যদি উৎপাদন চালু থাকে কনজিউম করার টাকা কোথায় পাবে।
এতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা থাকবে না। ভোগ তো কমবেই। আপনাকে ধরে নিতে হবে আমরা বিশেষ সময় পার করছি, এটা কোনো স্বাভাবিক সময় নয়।

এ জন্য করণীয়?
এ জন্য গ্রামের মানুষকে সচেতন করতে হবে। প্রথম ঢেউয়ে সারা বিশে^ করোনার আঘাতে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছিল, সে তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা ভালো ছিল; গ্রামগঞ্জে ছড়ায়নি। এখন তো গ্রামে ছড়িয়েছে। এ জন্য আমাদের ভয় বেশি। গ্রামের লোককে সচেতন করতে হবে। আমার মনে হয়, গণমাধ্যমসহ যারা সংশ্লিষ্ট আছে সবাই মিলে লিখতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে।

যেমন ধরুন আওয়ামী লীগ ৭২ বছরের একটি পুরনো রাজনৈতিক দল। দলটির একেবারে ওয়ার্ড পর্যন্ত কমিটি আছে। আওয়ামী লীগ বলেন, ছাত্রলীগ বলেন, যুবলীগ বলেন, শ্রমিকলীগ বলেন, স্বেচ্ছাসেবকলীগ বলেন সংগঠনটির সব ধরণের সংগঠন আছে। ওয়ার্ড থেকে একেবারে বাড়ি বাড়ি দলটির লোক আছে। এদের যদি সম্পৃক্ত করা যায় তাহলে একেবারে মানুষের ঘরে ঘরে বার্তা পৌঁছানো যাবে। পুলিশ, বিজিবি আর্মির পাশাপাশি তাদের নিয়োজিত করতে সচেতনতার কাজটি করা সম্ভব হবে। তাহলেই করোনার গ্রাম থেকে যে আঘাত শুরু হয়েছে সেটা মোকাবিলা সম্ভব হবে।

প্রথম ঢেউয়ে মানুষ যেভাবে বের হয়েছিল, সেভাবে যদি মানুষকে আবার জাগানো যায়, সচেতন করা যায় তাহলে তো এটা সম্ভবই-
হ্যাঁ। সে সময় মানুষ সহযোগিতা নিয়ে বের হয়েছিল। কিন্তু‘ মানুষ কয়দিন দেবে! সে সময় মানুষ খাওয়া দিয়েছে, রান্না করা খাদ্য দিয়েছে। এটা কিন্তু এখন একদম নেই।

আপনি গ্রামে যান এখনো মানুষ তাকিয়ে থাকে। মনে করে লোকটি বোধ হয় করোনার রোগী। এখন এই যে গণসচেতনতা-আপনি মাস্ক পরলে বেঁচে যেতে পারেন। যে জায়গায় রোগী আছে সেখান থেকে আপনি দূরে থাকুন, দূরত্ব বজায় রাখুন। এই জায়গা নিয়ে আমার মনে হয় সিরিয়াসলি কাজ করতে হবে। ভ্যাকসিন তো আমি এখন পাচ্ছি না। ভ্যাকসিন হয়ে গেলে একটি হার্ড ইমিউটিশন হয়ে যাবে। তখন আর সমস্যা থাকবে না। যতদিন ভ্যাকসিন দিতে পারছি না, ততদিন মাস্কই ভরসা।
যেমন আমেরিকা বলছে তাদের মাস্কের দরকার নেই। মাস্ক তারা ফেলে দিয়েছে। আমাদের ওই জায়গায় যেতে হবে।

হ্যাঁ, অবশ্যই আপনি যেটা বলছিলেন, একজনের জন্য আরেকজন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এখন সেটা নেই। আসলে হয়েছে কি, সবাই এখন ক্লান্ত হয়ে গেছে। এখন সবারই তো অবস্থা খারাপ। সরকার চেষ্টা করছে স্টিমুলাস প্যাকেজ দিতে, এটা তো গ্র্যান্ড না। এটা লোন। এখন ছোট্ট ব্যবসায়ী ছোটর মতো বিপদে, বড় ব্যবসায়ী বড়র মতো বিপদে।

আপনি একটি সংকটময় সময়ে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের দায়িত্ব নিয়েছেন, আগে এফবিসিসিআই-এর সহ-সভাপতি ছিলেন। ব্যবসায়ীদের মাঝে অনেকদিন থেকেই আলোচনায় ছিল আপনি শীর্ষ দায়িত্বে আসছেন। আপনি দায়িত্বে এসেছেন। এটা একটা মহাবিপর্যয়ের সময়ে দায়িত্ব নিয়েছেন। এই চ্যালেঞ্জের সময়ে এই শীর্ষ পদে এসে বিষয়টি কিভাবে নিচ্ছেন?
আমি অনেক আগে থেকেই কাজ করছিলাম। অন্য জায়গায় কাজ করেছি, বিভিন্ন সেক্টরের সঙ্গে আছি। এখন তো বিশ^ব্যাপী একই পরিস্থিতি। আমার টার্মে পড়ে গেছে এই চ্যালেঞ্জ। তারপরও আমি চাই যাতে ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াতে পারি, সরকারের পাশে দাঁড়াতে পারি।

চ্যালেঞ্জ তো আমাদের প্রতিটা পর্যায়ে আছে। এই চ্যালেঞ্জ নিয়েই আমাদের এগোতে হবে। এখন একটু বেশি চ্যালেঞ্জ। তারপরও সরকারের সে সকল চ্যালেঞ্জ আছে, ব্যবসায়ীদেরও সমস্যা আছে। এগুলো নিয়েই আমাদের সোচ্চার হওয়া দরকার। এখানে শুধু ‘আমি’ নই, আমরা। আমরা একটি টিম। এই টিম নিয়ে এগুলোতে হবে। গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আপনিও এই টিমে আছেন।

আমরা এখন যে অবস্থায় আছি, যে সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি, এখন শুধু সরকার বা আমি নই। যে যেখানে আছি প্রতিটি নাগরিকের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে সহযোগিতার হাত নিয়ে দাঁড়াতে হবে।

এই অবস্থায় দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের শীর্ষ ব্যক্তি হিসেবে সংকট মোকাবিলা করে দেশের ব্যবসায়ী সমাজকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কী কী পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। এক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন?
আমি আসার পর পরই বাজেট হলো। বাজেটে আমাদের অনেকগুলো ব্যাপার ছিল। আমরা অনেকগুলো প্রস্তাব উপস্থাপন করেছি, কিছু হয়েছে, কিছু হয়নি। যেগুলো হয়নি সেগুলো বিবেচনা করার জন্য, টাস্কফোর্স গঠন করার জন্য এনবিআরকে ইতোমধ্যে একটি তালিকা দিয়েছি। যাতে এই টাস্কফোর্স নিয়মিত আলাপ-আলোচনা করে তা সমাধান করে। মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে বলেছি, ভ্যাট আইন আছে- এটা নিয়ে কাজ করার দরকার। তিনিও বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন। আমরা বলেছি এনবিআর এফবিসিসিআই-এর প্রতিনিধি নিয়ে কাজ করার জন্য। এই যে লটস অব একটিভিটিস, কতকগুলো আছে চলতেই থাকবে, কর্মসূচি চলতেই থাকবে।
এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো- কোভিড পরিস্থিতিতে সবাই বিপদগ্রস্ত। সরকারও বিপদগ্রস্ত’। এই যে দেখুন, আমেরিকা এখন সব খুলে দিয়েছে। খুলে দেওয়ার কারণে তাদের লোকজন বাইরে বের হয়েছে। তাদের মানুষজনকে স্বাভাবিক চলাফেলার অনুমতি দিয়েছে। করোনার কারণে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে টাকা দিয়েছে। সেই টাকাটা এখন তারা খরচ করছে। যেহেতু তারা এখন ফ্রি হয়ে গেছে। গত মাসে তাদের ২৩ ভাগ রিটেইল স্পেন্ডিং বেড়েছে। এখন এই অবস্থায় আমরা আছি লকডাউনে। আমাদের রপ্তানি পণ্যের অর্ডারগুলো আসার কথা। এই লকডাউনের কারণে কাস্টমাররা এখন ভয়ের মধ্যে আছে, আমরা অর্ডার দিলাম, পণ্যগুলো সময়মত পাব কি না? যদি চায়না থেকে ক্রয় করি তাহলে সময়মত পাব। এই যে কাস্টমারদের শংকা তারা বিপদে পড়ল- এটা হলো এক নম্বর। দুই নম্বর হলো- আমেরিকা তো ভুলে গেছে তাদের খারাপ পরিস্থিতি ছিল। এখন আমাদের খারাপ অবস্থা, তারা মনে করছে সেখানে তো যাওয়া যাবে না, সেখানে লোক পাঠানো যাবে না। যেখানে ভালো আছে, যেখানে লোক পাঠানো যায় সেখানে পাঠাও।

এই হলো এখন অবস্থা। এছাড়াও আমাদের স্থানীয় দোকান, সেবা শিল্প, পর্যটন শিল্প, পরিবহন খাত সবই ক্ষতিগ্রস্ত। এই অবস্থায় আমাদের অগ্রাধিকার কি? এই অবস্থায় সরকারের উচিত হবে যারা ছোট্ট ব্যবসায়ী আছেন তাদের হাতে কিছু করে টাকা পয়সা দেওয়া।

জাপান এই কোভিডের সময় তাদের ব্যাংকে যে ঋণ ছিল সেগুলোর ১৫ বছরে রিপেমেন্টের ব্যবস্থা করেছে। আমাদের এখানকার ব্যাংকের ঋণ ফেরত দিতে সরকার যে সময় বেঁধে দিয়েছিল তা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। এরপর দুই মাস বাড়িয়ে আগস্ট পর্যন্ত করেছে এবং ২০ শতাংশ জমা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে। এখন ব্যবসায়ীরা টাকাটা দেবে কোথা থেকে? এখন টাকাও যদি না পায় ব্যাংকগুলোও বিপদে পড়ে। টাকা না পেলেও সুদ পেল। টাকাটা যদি না পায়, গ্রাহকরা যদি খেলাপী হয়ে যায় বিনিয়োগের পথও বন্ধ হলো; ব্যাংকও বিপদে পড়ল। চতুর্মুখী সংকট। সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে, সেটা তো গ্র্যান্ড না, সিচ্যুয়েশনের কারণে ঋণ দিচ্ছে। অন্যদেশ এ সুযোগটা দিয়েছে, আমাদের এখানে সামর্থ্য অনুযায়ী এক বছরের সুবিধা দেওয়া, দুই বছরের জন্য দেওয়া- এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত।

সরকার এই আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস বাড়িয়েছে। সময় বাড়ানোর জন্য আমরা মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে বলেছি, গভর্নরকে বলেছি, অর্থ সচিবকে বলেছি- এগুলো করার জন্য। এখন এই ধরণের কতগুলো জায়গা যদি সরকার না করে দেয় তাহলে ব্যবসায়ীরা দাঁড়াবেন কোথায়? আমি তো গ্র্যান্ড চাইনি।

ধরুন এখন এই ১৫ দিন লকডাউন হচ্ছে। হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ করে দেওয়া হলো। পরিবহন বন্ধ হলো, মার্কেটগুলো বন্ধ হলো। এই ১৫ দিনের বেতন কীভাবে দেবে? সরকারের উচিত প্রণোদনা নিয়ে এই লোকগুলোর পাশে দাঁড়ানো; ক্যাশ টাকার প্রণোদনা নিয়ে দাঁড়ানো উচিত। তা না হলে এই লোকগুলো তো শেষ হয়ে যাবে।

করোনা প্রতিরোধে আমাদের হাতে কিছু ইনস্ট্রুমেন্ট এসেছে, রোগী ব্যবস্থাপনাতেও অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রথম ঢেউ মোকাবিলার পর আইএমইফ ও বিভিন্ন সংস্থা আমাদের প্রশংসা করেছে। এখন আমরা করোনার যে পরিস্থিতির মুখোমুখি, তা মোকাবিলা করা সহজ বলে কি আপনি মনে করেন?
তখন আমেরিকার অবস্থা খারাপ ছিল, ইউরোপের অবস্থা খারাপ ছিল। সেই তুলনায় আমরা ভালো ছিলাম। আর তারা খারাপ অবস্থায় ছিল। এখন আমরা খারাপ অবস্থায় পড়লাম। ওরা ঠিক হয়ে গেছে। নিজেদের জায়গা থেকে তারা চিন্তা করেছে। এখন যদি করোনা গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে যায়, আমরা যদি খারাপ অবস্থায় চলে যাই; কেননা, আমরা তো গরিব মানুষ ভাই। ওরা খারাপ ছিল এখন আমরা তা বলতে পারছি না।

এই পরিস্থিতিতে সমন্বয় দরকার। সরকারেরও সীমাবদ্ধতা আছে। সরকার ইচ্ছা করলে সব পারবে না। সরকারের সামর্থ্য নিয়ে যতদূর পারা যায় ততদূর নিয়ে সরকারকে দাঁড়াতে হবে।

এসএমই খাতের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু‘ আমরা সেটা কাজে লাগাতে পারলাম না। অথচ আমাদের কর্মসংস্থানের বড় জায়গা এই খাত। এ ব্যাপারে কি বলবেন?
আমাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। এ টাকার পুরোটা বিতরণ হয়নি। ২৮ ভাগ এখনো বিতরণ হয়নি। কেন হলো না? তারপর যেটা বিতরণ হয়েছে সেই ৭২ শতাংশ আসলেই এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ হয়েছে কি না? আমার মনে হয় এগুলো দেখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করার দরকার আছে। তাদেরকে প্রশ্ন করা দরকার, তুমি বিতরণ করতে পারলে কেন? তোমাদের সমস্যাটা কী? এ সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে অর্থনীতির সহায়তার জন্য, আর সেটা বিতরণ হলো না। যদি সমস্যা চিহ্নিত করা যায় তাহলে সেটা আগামীতে কাজে লাগানো যাবে।

সর্বশেষ সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ে কিছু বলবেন।
সর্বশেষ আমার বলার কথা তিনটা। এক- ভ্যাকসিনেশন, দুই- জনসচেতনতা। সবাইকে নিয়ে সচেতনতার কাজটি করতে হবে। যারা সিনিয়র নাগরিক, স্থানীয় সরকারের সঙ্গে যারা আছেন তারা, সঙ্গে চেয়ারম্যান, পৌরসভা ও সিটি করপোরশেন প্রধানদের সম্পৃক্ত করে এ কাজটি করতে হবে। সঙ্গে এখন সরকারের পুলিশ, বিজিবি- এখন তারাই কাজ করছে। আর্মি কাজ করছে। কিন্তু‘ রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণ সঙ্গে নেই। রাজনৈতিক দলকে সম্পৃক্ত করতে হবে। রাজনৈতিক দলের যে নেটওয়ার্ক আছে সেটা কাজে লাগাতে হবে। তিন নম্বর হচ্ছে – এখন লকডাউনের কারণে যারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের জন্য একটি প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে আসা।
– দৈনিক খোলা কাগজ

লাইক কমেন্ড ও শেয়ার করে সাথে থাকুন-

আরো খবর

© All rights reserved | 2016 dhaka24.net by |

Theme Customized BY WooHostBD