October 27, 2025, 8:23 pm

বাংলাদেশে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ডেস্ক রিপোর্ট- 177 View
Update : Wednesday, September 7, 2022

বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে ‘উদার রাষ্ট্র’ বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অবকাঠামো, জ্বালানি ও পরিবহন খাতে বিনিয়োগে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

বুধবার (০৭ সেপ্টেম্বর) নয়াদিল্লির হোটেল আইটিসি মৌরিয়াতে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

ব্যবসায়ীদের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের অবকাঠামো, প্রকল্প, শিল্পকারখানা, জ্বালানি এবং পরিবহন খাতে সম্ভাব্য বিনিয়োগ বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করবো। ভারতীয় বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কম সময়ে, সাশ্রয়ী ব্যয় এবং স্বল্পসম্পদে উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয়ের নিশ্চয়তাসহ বাই-ব্যাক ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশে শিল্প স্থাপন করতে পারেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে এ অঞ্চলের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে বিস্তৃত সুযোগ-সুবিধা, আকর্ষণীয় প্রণোদনা নীতি এবং ধারাবাহিক সংস্কার প্রক্রিয়ার সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে শিল্প, কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি এবং বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বিনিয়োগ ও দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ২৮টি হাইটেক পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে।

ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য, মোংলা এবং মিরসরাইয়ে দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা হচ্ছে। আমি আজ এখানে উপস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেখানে বিনিয়োগ করার জন্য অনুরোধ করবো।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ মোট ১৩৭০.৩৫৭ মিলিয়ন ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) পেয়েছে, যার মধ্যে ভারত থেকে এসেছে ১৫.৭৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ মোট এফডিআইয়ের মাত্র ১.১৫ শতাংশ । দ্বিমুখী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ থেকে আমরা কীভাবে আরও সুফল পেতে পারি, সেই পথ খুঁজে বের করতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং বাণিজ্য সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করে আমাদের দুই দেশের সহযোগিতা আরও জোরদার করা প্রয়োজনীয়তা আমরা এখানে স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটি দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের সদিচ্ছাকে কাজে লাগানোর পথকে আরও প্রশস্ত করবে এবং এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনবে কারণ ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশের যে অবস্থান, সেখানে বিনিয়োগ করলে ভারতের বিনিয়োগকারীরা তাদের পণ্য শুধু ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে রপ্তানি করতে পারবে তা নয়, নেপাল, ভুটান এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও রপ্তানি করতে পারবে।

ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া এবং এর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সস্তা খরচ এবং বিশাল ভোক্তা শ্রেণির সুবিধা নেওয়ার সময় এসেছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানগত সুবিধার কারণে বিশাল বাজার পাওয়ার সুযোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা শুধুমাত্র ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে নয়, নেপাল, ভুটান এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে তাদের পণ্য রপ্তানি করতে সক্ষম হবে।

দুই দেশের মধ্যেকার সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দুর্দান্ত ভালো সম্পর্ক রয়েছে। যেখানে দুই দেশের সম্পর্ক প্রতিবেশী কূটনীতির রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। ৫৪টি অভিন্ন নদী এবং ৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত থাকা দুই দেশের মধ্যে বিরোধ নেই। বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন ও বাণিজ্য অংশীদার। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার বিদ্যমান গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পর একটি স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে উঠতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছে। দুর্ভিক্ষ এবং খাদ্য-সহায়তা নির্ভরতার সেই দিনগুলো পার করে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিভিন্ন শস্যসহ বাংলাদেশ এখন চাল, শাকসবজি, স্বাদু পানির মাছের বৃহত্তম উৎপাদনকারী দেশগুলোর একটি।

তিনি আরও বলেন, অতীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার বাংলাদেশ আজ দুর্যোগ প্রস্তুতি ও মোকাবিলার এক দৃষ্টান্ত।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লি যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর শেষে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন তিনি।


More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর